পাকিস্তানে পেসারের জন্ম হয়। একথা আগে সবসময়ই শোনা যেত। ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, শোয়েব আখতার, আকিব জাভেদ- লম্বা নামের তালিকা। সম্প্রতিদের মধ্যে ওয়াহাব রিয়াজ, মোহম্মদ আমিররাও থাকবেন সেই তালিকায়। কিন্তু সবার চেয়ে আলাদা হয়ে থাকবেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
ইমরান, আকরাম, ওয়াকার, শোয়েবরা যা কখনও পারেননি তাই করে দেখালেন তিনি। পূর্বসুরীদের যন্ত্রণা ভোলালেন। বিশ্বকাপের মঞ্চে গতকাল রবিবার (২৪ অক্টোবর) একাই গুঁড়িয়ে দিলেন ভারতের ব্যাটিং লাইনআপকে। ঝুলিতে ৩ উইকেট। নিলেন রোহিত, রাহুল, বিরাটের উইকেট। ভারতের ব্যাটিং লাইনআপের তিন সেরা অস্ত্রকেই তুলে নিলেন আফ্রিদি।
প্রথম স্পেলে বোল করতে এসে আফ্রিদি তার প্রথম ৩ ওভারে ভয় ধরিয়ে দিলেন রোহিত-রাহুলদের। শাহিন আফ্রিদি প্রথম ওভারে উইকেট পেলে পাকিস্তান ম্যাচ হারে না। সেই মিথ বিশ্বকাপের আসরে ভারতের বিরুদ্ধেও অক্ষত থাকল। প্রথম ওভারেই রোহিত শর্মাকে যে বলে আউট করলেন তা এককথায় অসাধারণ। পরের ওভারে লোকেশ রাহুলকে ক্লিন বোল্ড। স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছে ভারতের ৬ রানে ২ উইকেট। ওখানেই মানসিকভাবে ম্যাচটা হেরে বসলেন বিরাটরা।
২১ বছরের বাঁহাতি তরুণ পেসারের গতিতেই শেষ হয়ে গেল ভারতের ব্যাটিং লাইন আপ। ম্যাচের সেরাও হলেন শাহিন আফ্রিদি। ভারতের বিরুদ্ধে ৩ উইকেট নিয়ে তিনি বলেন, “দলের যা পরিকল্পনা ছিল সেটাকে কাজে লাগাতে পেরে খুশি। আমাদের পরিকল্পনাই ছিল ভারতের টপ অর্ডারে শুরুতেই ভাঙন ধরানো। একই সঙ্গে ডেথ ওভারেও উইকেট নেওয়া। দুইটিতেই আমি সফল। সুইংকে কাজে লাগাতে গতকাল নেটে অনেক ঘাম ঝরিয়েছি। উইকেট নিতে গিয়ে যদি কিছুটা রানও হজম করতে হয় তাতে আপত্তি নেই। আমি সবসময় চেয়েছি ব্রেক থ্রু করতে। আর সেটা ১০০ শতাংশ কাজে দিয়েছে। নতুন বলে ব্যাট করা অনেক কঠিন। বাবর আর রিজওয়ানেরও কৃতিত্ব প্রাপ্য। বিশ্বকাপে সকল দলই কঠিন। আমরা আমাদের এই ধারা বজায় রেখেই ফাইনালে উঠব।”
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে চর্চায় ছিলেন বুমরা-সামি-ভুবনেশ্বররা। পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপকে হিসেবের মধ্যেই ধরেননি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু শাহিন আফ্রিদি বুঝিয়ে দিলেন, পাকিস্তানের বোলাররা এখনও ফুরিয়ে যায়নি। যতই তাদের ইতিহাসের পাতায় ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা হোক, বিশ্ব ক্রিকেটের ঘুম ভাঙিয়ে বারবার এ ভাবেই ফিরে আসবেন আফ্রিদিরা।