মোঃ জহুরুল ইসলাম:
টাঙ্গাইল মধুপুর উপজেলার মহাসড়কের পাশে মালাউড়িতে মেসার্স ফরিদ এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার মোঃ ফরিদ উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্স ও সাইনবোর্ড বিহীন কার্গো গাড়ীর ভিতরে লরীতে করে টিনের ঘরের ভিতরে ঝুকিপূর্ণ পরিবেশে অনুমোদন বিহীন ফিলিং ষ্টেশন থেকে সিএনজি গাড়ীসহ বিভিন্ন যানবাহন ও সিলিন্ডার বোতলে করে প্রকাশ্যে এলপিজি গ্যাস বিক্রির করার অভিযোগ উঠেছে। নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করেই ঝুকিপূর্ণভাবে এরূপ অপকর্মের তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্থানীয়দের। স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ০২ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখে সরেজমিনে ঐ গ্যাস ফিলিং ষ্টেশনে গেলে তাদের এরূপ অপকর্মের দৃশ্যটি চোখে পড়ে। আশেপাশের লোকজন ও দোকান পাটের ব্যবসায়ীরা অভিযোগে জানান, কিছুদিন আগেও এ অবৈধ এলপিজি গ্যাস ষ্টেশনে বিস্ফোরণ ঘটেছিল। তবুও বন্ধ হচ্ছে না এ অবৈধ এলপিজি গ্যাস স্টেশনটি। যে কোন সময় ভয়ঙ্কর দূর্ঘটনা ঘটে প্রাণহানীর আশঙ্কা থাকায় কর্তৃপক্ষের নজরদারি প্রয়োজন বলে স্থানীয়দের দাবি। কেননা বিস্ফোরক আইনে বলা আছে, সয়ংক্রিয় ইঞ্জিনে জ¦ালানী সর্বরাহ কাজে নিয়োজিত এলপিজি বিতরন ষ্টেশন হতে মটরযানে বা অন্য কোন সয়ংক্রিয় ইঞ্জিনের সঙ্গে সংযুক্ত জ¦ালানী ধারন প্রাত্র ব্যতীত অন্য কোন বহনযুক্ত পাত্রে এলপিজি ভর্তি করা যাবে না। আর এ আইন ব্যাহত হলে ২-৫ বছরের কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাস কারাদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে এলপিজি গ্যাস ষ্টেশনে দায়িত্বে থাকা ইদ্রিস, আসাদুল্লাহ ও ড্রাইভার রিপন স্বীকার করে জানান, প্রতিদিন সিএনজি, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে গ্যাস সরবরাহের পাশাপাশি অন্তত দেড়শত থেকে আড়াইশত সিলিন্ডারে গ্যাস ভর্তি করে বিক্রি করেন তারা। গ্যাস নিতে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে এবিষয়ে কথা হলে তারা জানান, গ্যাস বিক্রয় কেন্দ্র গুলো থেকে এক সিলিন্ডার গ্যাস নিতে গেলে ১০৫০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা লাগে। কিন্তু এখানে ৫০০ টাকা দিলেই ১০ লিটার গ্যাস পাওয়া যায়। গ্যাস পাম্পের চাইতে এখানকার গ্যাসের চাপ কম থাকে তাই। তবে এভাবে গ্যাস নেওয়া অনিরাপদ ও অপরাধ। সে বিষয়ে তারা অবগত নন বলে জানান। অভিযোগ রয়েছে, বিভাগীয় কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের মালিক ফরিদ উদ্দিনের রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তার ক্ষমতার বলেই অবৈধভাবে বাজারদর থেকে ১০০ টাকা কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে এসব গ্যাস। আর বিভিন্ন কোম্পানীর বোতল সংগ্রহ করে নিজেদের রিজার্ভ থেকে গ্যাস ভর্তি করছেন তারা। ফলে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগে গড়ে উঠা গ্যাস বিক্রয় করা কোম্পানীগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এভাবে সিএনজিসহ অন্যান্য যানবাহন ও সিলিন্ডারে গ্যাস বিক্রির প্রক্রিয়া মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ। যেকোন সময় বিস্ফোরণ ঘটলে এলাকার মানুষ শতভাগ মৃুত্যর ঝুকির মধ্যে রয়েছে। বৈধ কাগজপত্র অনুমোদন বিহীন এলপিজি গ্যাস ফিলিং ষ্টেশন স্থাপন করে ঝুকিপূর্ণ পরিবেশে গ্যাস সরবরাহ করায় একদিকে যেমন মৃত্যুর ঝুকি অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। এ বিষয়ে সাইনবোর্ড বিহীন ঐ গ্যাস ফিলিং ষ্টেশনের মালিক ফরিদ উদ্দিনকে সেলফোনে কার্গো গাড়ীর ভিতরে লরীতে করে ঝুকিপূর্ণ পরিবেশে বিভিন্ন যানবাহনে ও সিলিন্ডারে অনুমোদন বিহীন কিভাবে গ্যাস বিক্রি ও সরবরাহ করছেন জানতে চাইলে, তিনি বলেন, প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করার জন্য প্রতিমাসে আমি জনৈক এক ব্যক্তির মাধ্যমে ৪ হাজার টাকা বিকাশে পাঠাই। সেই আমার সবকিছুই দায়ভার নিয়েছে। অপরদিকে মালাউড়িতে টিনের ঘরের ভিতরে ঝুকিপূর্ণ ও সাইনবোর্ড বিহীন ফরিদ উদ্দিনের এ অবৈধ এলপিজি গ্যাস ফিলিং স্টেশনটি নিয়ম বহিভূতভাবে গড়ে উঠে বিভিন্ন যানবাহন ও সিলিন্ডারে গ্যাস বিক্রি ও সরবরাহের বিষয়ে তথ্য ও ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে জানতে বারবার মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সেলফোনে ফোন করলেও তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।