আসছে ২৬ মার্চ দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার এই সফর।
করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর এটিই মোদির প্রথম বিদেশ সফর। আর এই সফরের জন্য বাংলাদেশকেই প্রথম বেছে নিলেন তিনি। ফলে মোদির এই সফরকে কূটনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে ভারত পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিবেশিদের সাথে সুসম্পর্ক জোরদার করতে চায় এবং উত্তরের শত্রুভাবাপন্ন প্রতিবেশীদের নজরদারিতে রাখতে চায়।
মোদির তাৎপর্যপূর্ণ এই সফর পাকিস্তানের জন্য স্পষ্ট বার্তা যে, ভারত তার পূর্বাঞ্চলীয় এই প্রতিবেশীকে সমীহ করে এবং নয়াদিল্লির সাথে ঢাকার এক ধরনের বিশেষ বন্ধনের অংশিদারিত্ব রয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধে অপমানজনক পরাজয়ের পর, সেই ১৯৭১ সাল থেকেই পাকিস্তান প্রতিশোধ নিতে বেশ কয়েকবার মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে। ভারতের সঙ্গে প্রথাগত সবগুলো যুদ্ধে হেরে গেছে পাকিস্তান। এমনকি প্রক্সি যুদ্ধ, যা প্রথমে শুরু হয় পাঞ্জাবে এবং পরবর্তীতে জম্মু ও কাশ্মীরে, এতেও হেরে যায় পাকিস্তান।
১৯৭১ সালে যুদ্ধে হেরে যাওয়ার পর থেকে আজ অবদি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কন্নোয়নের বহু চেষ্টা করেছে পাকিস্তান। কিন্তু বাংলাদেশ যুদ্ধকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সেই বর্বতার কথা ভুলে যায়নি।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মোদি ছাড়াও অংশ নিচ্ছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও নেপালের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি। তাদের মধ্যে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে বর্তমানে বাংলাদেশেই অবস্থান করছেন। ইতোমধ্যে সফর সম্পন্ন করেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ।
আগামী ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নরেন্দ্র মোদি। পাকিস্তানের কাউকে এই উদযাপেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পূর্বাঞ্চলীয় সকল প্রতিবেশী রাষ্ট্রের জন্য বড় ভাইয়ের ভূমিকা পালন করে ভারত। সেই সঙ্গে যেকোনও প্রয়োজনে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়। এই প্রতিবেশীরাও সব সময় ভারতের অবদান স্বীকার করে এবং যখনই প্রয়োজন পড়ে ভারতকে সমর্থন দেয়। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেও রয়েছে এক ধরনের বিশেষ বন্ধন।
এই উদযাপনে পাকিস্তানকে উপেক্ষা করার মানে হল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা, সেটি হচ্ছে- ভারত বাংলাদেশের জন্য সব সময়ের বন্ধু। আর করোনা মহামারীর এই সময়ে সফরের জন্য বাংলাদেশকে প্রথম বেছে নিয়ে নরেন্দ্র মোদিও সেই ইঙ্গিতই দিলেন। তিনিও (মোদি) এর মাধ্যমে এটাই পরিষ্কার করলেন যে, বাংলাদেশও ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং সব আবহাওয়ার বন্ধু।