পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৭, ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত সদস্য পদে মা জীবন নাহার ও মেয়ে বুলবুলি আকতার প্রার্থী হয়েছেন। তারা দুজনে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে মা-মেয়ের এই ভোটের লড়াই মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে ওই এলাকায়। অনেকে বিষয়টিকে হাস্য রসাত্মকভাবে গ্রহণ করলেও অনেকে সমালোচনা করছেন।
ওই ওয়ার্ডে মোট পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ১১ নভেম্বর এই ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন। মা-মেয়ের ভোটের লড়াই ভোটারদের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। জানা গেছে, অন্য আরেকটি ওয়ার্ডে জীবন নাহারের আরেক মেয়েও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নির্বাচন করছেন।
স্থানীয়রা জানান, জীবন নাহারের স্বামী ওই ইউনিয়নের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে পর পর দুইবার নির্বাচিত হন। বর্তমানেও তিনি ইউপি মহিলা সদস্য। এবারও তিনি নির্বাচন করছেন। মা-মেয়ের মধ্যে পারিবারিক কোনো দ্বন্দ্বের কথাও শোনেননি কেউই। এবারের ভোটে মেয়ে বুলবুলি হঠাৎ প্রার্থী হয়েছেন। গত বিশ দিন ধরে মা-মেয়ে কেউ কারো বাড়িতে যাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে মেয়ে বুলবুলি জানান, মার বয়স হয়েছে। তিনি ইউপি সদস্য হওয়ার শুরু থেকেই আমি তার কাজ করে দেই। তার দায়িত্বগুলো আমি পালন করি। গত নির্বাচনে তিনি ভোটারদের কে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবার তিনি প্রার্থী হবেন না। আমাকে প্রার্থী করবেন। পারিবারিকভাবেও একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। সবাই আমাকে প্রার্থী হওয়ার কথা বলেছে। এখন হঠাৎ করে আমার ভাইয়ের প্ররোচনায় মা প্রার্থী হয়েছেন। আমার জনপ্রিয়তা আছে, আমি নির্বাচিত হবো।
অন্যদিকে, মা জীবন নাহার মেয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি একজন মুরুব্বি। আমার মেয়ে প্রার্থী হবে তা সে কখনো জানায়নি। জানালে আমি প্রার্থী হতাম না। আমার মেয়ে তার স্বামীর প্ররোচনায় প্রার্থী হয়েছে। অসুবিধা নেই, আমি পর পর দুবার নির্বাচিত হয়েছি। এবারও হবো।
শতদল আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা লাবলু বলেন, দুই বারের নির্বাচিত মহিলা সদস্য জীবন নাহার। মেয়ে বুলবুলি একই ওয়ার্ডে ভোট করায় স্থানীয়দের মাঝে একটু মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেন এমনটা হলো কেও বুঝতে পারছেন না। অনেকে বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখছেন না। এই ঘটনা সমাজে পারিবারিক সম্পর্কগুলোকে নষ্ট করবে। সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
এদিকে, তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য পদে ওই পরিবারের আরেক মেয়ে সেতারা বেগমও নির্বাচন করছেন।
রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, একই পরিবারের কয়েকজন প্রার্থী হলেও ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো বাধ্য বাধকতা নেই।