1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ অপরাহ্ন

মাথাব্যথার জন্য মাথা না কেটে ওষুধ দেবো: র‍্যাব ডিজি

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, যেভাবেই হোক কিশোর গ্যাং কালচারকে নিয়ন্ত্রণে আনতেই হবে। আমরা নিশ্চয়ই মাথাব্যথার জন্য মাথা না কেটে মাথাব্যথার ওষুধ দেবো। এটার জন্য দরকার জনসচেতনতা। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে কোনোভাবে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে পারি না।

শনিবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) ‘কিশোর গ্যাং বৃদ্ধির কারণ’ নিয়ে অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’।

তিনি বলের, যেখানেই কিশোর গ্যাং কালচার রয়েছে সেখানে কিন্তু আমাদের তরুণ-কিশোররা বিপথে পা বাড়াচ্ছে। আমাদের সামাজিক যে স্বাভাবিক আচার-আচরণের তার বাইরে গিয়ে তারা বিচ্যুত পথে যাচ্ছে। বিচ্ছিন্নতাবোধ থেকে বের হতে হবে। দেশে বই পড়া-খেলাধুলা বাড়াতে হবে। আমরা নিশ্চয়ই মাথাব্যথার জন্য মাথা না কেটে মাথাব্যথার ওষুধ দেবো।

তিনি বলেন, ২৭২ জনের বেশি কিশোর গ্যাং সদস্যকে আমরা আটক করেছি। এই কিশোর অপরাধীদের এজন্যই গ্রেফতার করতে হয়েছে যাতে কিশোর গ্যাং কালচার ও কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, জলদস্যু নির্মূলে আমরা অনেক কাজ করছি। জলদস্যু ও জঙ্গিবাদে জড়িতদের সমাজের মূলধারায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। অনেকে জলদস্যু ও জঙ্গিবাদের পথ থেকে ফিরে এখন স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন।

র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, আমাদের গর্ব পারিবারিক বন্ধন। পারিবারিক বন্ডিংয়ের কারণে অনেক নেতিবাচক কাজে আমরা জড়াতে পারি না। এরপরও অনেক কিছু ঘটছে। কিশোররা কেন গ্যাং কালচারে জড়াচ্ছে তা খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের সবারই অনেক দায়িত্ব আছে। সবার যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সুন্দরবনে জলদস্যুতা বন্ধে র‍্যাব অনেক কাজ করেছে। সুন্দরবনে এখন সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বিচ্যুত পথে যেতে দেওয়া যাবে না। আভিযানিক কার্যক্রমের পাশাপাশি আমাদের সচেতনতা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হিসেবে পরিণত হতে যাচ্ছে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য কিন্তু সমাজের নারী-পুরুষ কিশোর-তরুণ সবারই দরকার আছে। সবাই মিলেই আমাদের স্বপ্নের সোনার বাংলা। আমাদের দেশেও এক সময় বিদেশের লোকজন কাজ করতে আসবে। আগামী ২০ বছরের মধ্যে বিদেশের মতো আমাদের দেশেও একজন ক্লিনিং লেডিও কর্মস্থল থেকে নিজ গাড়িতে করে বাড়ি ফিরবেন।’

তিনি বলেন, আমাদের কিশোর-তরুণরা যেন গর্বিত নাগরিক হয়, কোনো অপরাধে যেন না জড়ায়। তবেই সুন্দর, উন্নত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব। আমরা যা করতে পারিনি আমাদের আগামী প্রজন্ম যেন তা করতে পারে সেজন্য সবার ঐকান্তিক চেষ্টা-সহযোগিতা-সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, একসময় দেশের কিশোর তরুণদের মধ্যে নানা রকম খেলাধুলা, শিল্প-সংস্কৃতিসহ সমাজ-কল্যাণমূলক কাজের প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যেতো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আশঙ্কাজনকভাবে কিশোর অপরাধ বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে গ্যাং কালচার। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা হাতাহাতি, মারামারি এমনকি খুনের ঘটনাও ঘটাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহারের কারণে কিশোর গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। টিকটকসহ বিতর্কিত বিভিন্ন অ্যাপসের অপব্যবহারের মাধ্যমে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফাঁদে ফেলা হচ্ছে অনেক কিশোরী-তরুণীকে। আর্থিক প্রলোভনে ফেলে এসব কিশোরীদের তারকা বানানোর স্বপ্ন দেখানো হয়। নিচু মানের ও অশালীনতাপূর্ণ কন্টেন্টের বেশি ব্যবহার দেখা যায় টিকটক, লাইকিসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

তিনি বলেন, সুস্থ বিনোদন ও সমাজের ইতিবাচক চিত্র উপস্থাপনের জন্য এসব অ্যাপসগুলো তৈরি হলেও এর ব্যাপক অপব্যবহার হচ্ছে। ফলে দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশে কিছু কিছু শিশু কিশোর থেকে আরম্ভ করে বড়রা পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহারে আসক্ত হয়ে পড়ছে। তবে শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার নয়, ত্রুটিপূর্ণ সমাজব্যবস্থা, শিথিল সামাজিক বন্ধন, পারিবারিক বন্ধনের ঘাটতি, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ, সন্তানকে সময় না দেওয়া, সামাজিক অবক্ষয়, সঙ্গদোষ, মাদকের সহজলভ্যতাসহ নানা কারণে কিশোর-তরুণরা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।

কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে অবস্থানরত ১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী কিশোরদের ২০ শতাংশ হত্যা ও ২৪ শতাংশ নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামি বলে জানা যায়। এরা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদকসেবন, অস্ত্র ব্যবহার ইত্যাদি জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত। কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন সময়ে নানা দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু কিশোর গ্যাংয়ের মূল উৎপাটন করতে হলে তাদের পৃষ্ঠপোষকদের আইনের আওতায় আনতে হবে বলে জানান তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি