মাদারীপুরের শিবচরে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের কাঁঠালবাড়ি ঘাট সংলগ্ন এলাকায় স্পিডবোট ও বালুবোঝাই বাল্কহেডের সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। সোমবার (০৩ মে) রাতে নৌপুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) লোকমান হোসেন বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এতে আসামি করা হয়েছে স্পিডবোটের চালক শাহ আলম, মালিক চান্দু মোল্লা ও রেজাউল এবং বোটের ইজারাদার শাহ আলমকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নৌপুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আব্দুর রাজ্জাক।
নিহতরা হলেন-খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারুখালির মনির মিয়া (৩৮), হেনা বেগম (৩৬), সুমি আক্তার (৫) ও রুমি আক্তার (৩); ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার চরডাঙা গ্রামের আরজু শেখ (৫০) ও ইয়ামিন সরদার (২); মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার সাগর ব্যাপারী (৪০) ও সাগর শেখ (৪১); কুমিল্লার দাউদকান্দির কাউসার আহম্মেদ (৪০) ও রুহুল আমিন (৩৫) এবং তিতাস উপজেলার জিয়াউর রহমান (৩৫); মাদারীপুরের রাজৈরের তাহের মীর (৪২), রায়েরকান্দির মাওলানা আব্দুল আহাদ (৩০) এবং শিবচরের হালান মোল্লা (৩৮) ও শাহাদাত হোসেন মোল্লা (২৯); ভোলার ভেদুরিয়ার আনোয়ার চৌকিদার (৫০); চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মো. দেলোয়ার হোসেন (৪৫); নড়াইলের লোহাগড়ার রাজাপুরের জুবায়ের মোল্লা (৩৫); বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের মো. সাইফুল ইসলাম (৩৫), সায়দুল হোসেন (২৭) ও রিয়াজ হোসেন (৩৩); ঢাকার পীরেরবাগের খোরশেদ আলম (৪৫); ঝালকাঠি নালছিটির এসএম নাসির উদ্দীন (৪৫); পিরোজপুরের চরখালীর মো. বাপ্পি (২৮) এবং ভাণ্ডারিয়ার জনি অধিকারী (২৬)।
দুর্ঘটনা তদন্তে দুপুরে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন। কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দেবেন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশাদুজ্জামান, শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন, শিমুলিয়া বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন, শিবচরের চরজানাজাত নৌ-পুলিশের ইনচার্জ শেখ মো. আব্দুর রাজ্জাক ও নারায়ণগঞ্জের পাগলা কোস্টগার্ড স্টেশনের কমান্ডার লে. আসমাদুল।
এদিকে বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে স্পিডবোটের ২৬ যাত্রী নিহতের ঘটনায় স্পিডবোটটির চালক শাহ আলমকে আটক করেছে পুলিশ। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (০৩ মে) বিকেলে তাকে আটক করা হয়। দুর্ঘটনার পর শাহ আলমসহ পাঁচজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। তাকে এখন পুলিশের নজরদারিতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ইতোমধ্যে দুর্ঘটনা এলাকা পরিদর্শন করেছি। যারা দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।