বহিষ্কারের দাবির বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘ওনাকে বহিষ্কারের দাবি উঠতেই পারে। কিন্তু সংগঠন থেকে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’ এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যে বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে তা একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। মামুনুল হক নিজেই বিষয়টা ব্যাখ্যা করেছেন। তার ব্যাখ্যা দেওয়ার পর আমাদের বলার আর কিছু থাকে না।’
আল্লামা আহমদ শফী অনুসারী হিসেবে পরিচিত সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহী বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের বর্তমান কমিটির ধারাবাহিক অপকর্মের ফল হচ্ছে মামুনুল-কাণ্ড। তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে কওমি সমাজ আজ প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। মামুনুল হকসহ বর্তমান কমিটির নেতাদের বয়কট করার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ করছি।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতে ইসলামের এক নেতা বলেন, ‘সোনারগাঁয়ে নারীসহ অবরুদ্ধ হওয়ার পর মামুনুল হককে নিয়ে ঢাকার একটি মাদরাসায় জরুরি বৈঠকে বসেন হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন সিনিয়র নেতা। ওই বৈঠকে মামুনুল হককে দ্বিতীয় বিয়েসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন তারা। সংগঠনের দুই নায়েবে আমির বিয়ে এবং সোনারগাঁ-কাণ্ডের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন করলেও কোনো উত্তর দেননি মামুনুল হক। হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নেতাদের বড় অংশ মামুনুল হকের বহিষ্কার দাবি করে আমির ও মহাসচিবকে চাপ প্রয়োগ করছে।পক্ষান্তরে অপর একটি পক্ষ মামুনুল হককে রক্ষায় কর্মসূচি দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে শীর্ষস্থানীয় নেতাদের। জানা যায়, সোনারগাঁয়ে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীসহ জনতার হাতে অবরুদ্ধের পর হেফাজতে ইসলামের বর্তমান নেতৃত্বের একটি অংশ মামুনুল হকের পক্ষে অবস্থান নেয়। এমনকি তারা বিবৃতিও দেয়। কিন্তু ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডের বিষয়ে মামুনুল হক ফেসবুক লাইভে আসার পর পাল্টে যেতে থাকে সার্বিক চিত্র। এরপর হেফাজতে ইসলামের বর্তমান নেতৃত্বের বড় একটি অংশ মামুনুল হককে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের দাবি তুলে আসছে। এরই মধ্যে প্রভাবশালী কয়েকজন উপদেষ্টা, নায়েবে আমির এবং সম্পাদকীয় পদের কয়েক নেতা সংগঠনটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের কাছে মামুনুল হককে বহিষ্কারের জন্য চাপ প্রয়োগ শুরু করেছেন।
অন্যদিকে বর্তমান নেতৃত্বের একটি অংশ মামুনুল হকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে তাকে রক্ষায় দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। এমনকি মামুনুল হক সরকারের রোষানলের শিকার এমন দাবি করে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। তবে বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন আল্লামা আহমদ শফী অনুসারী হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা। তাদের দাবি, হেফাজতে ইসলামের বর্তমান কমিটির অপকর্মের ফল হচ্ছে মামুনুল-কাণ্ড। তাই বর্তমান কমিটির নেতাদের বয়কট করার দাবি তুলেছেন তারা।