গত সপ্তাহে ইউক্রেন যুদ্ধে রিজার্ভ সেনা সমাবেশের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মস্কোয় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস রাশিয়ায় বসবাসরত তাদের সব নাগরিককে দেশ ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। খবর সিএনএন-এর।
মার্কিন দূতাবাস এক সতর্কতা জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি খুবই চ্যালেঞ্জিং। জনাকীর্ণ সীমান্ত চেকপয়েন্ট এবং যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্যিক বিমান সহজলভ্য না থাকায় দেশ ছেড়ে যাওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা মার্কিন নাগরিকদের বিষয়টি রাশিয়া অস্বীকার করতে পারে এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া এসব মার্কিন নাগরিকদের রাশিয়া ছাড়তে বাধা দেওয়া হতে পারে এবং তাদের সামরিক সেবায় নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব কারণে মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে রাশিয়া ত্যাগ করা উচিত বলে মার্কিন দূতাবাস সতর্ক করেছে।
ইউক্রেনে তিন লাখ সৈন্য মোতায়েনে পুতিনের আদেশের পর হাজার হাজার মানুষ যারা এক্ষেত্রে যোগ্য, তারা দেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অনলাইনে প্রকাশিত বেশ কিছু ফুটেজে দেখা গেছে, শত শত মানুষ রুশ বিমানবন্দরে ভিড় করছে এবং রাশিয়ার প্রধান সড়কগুলো অবরোধ করে রেখেছে হাজার হাজার গাড়ি।
রাশিয়া থেকে বিস্তীর্ণ হাজার হাজার পুরুষ ফিনল্যান্ড, জর্জিয়া, কাজাখস্তান এবং মঙ্গোলিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করছেন। কাজাখস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার জানিয়েছে, গত সপ্তাহে দেশটিতে ৯৮ হাজার রুশ নাগরিক প্রবেশ করেছে। তবে এর মধ্যে ৬৪ হাজার ইতোমধ্যেই দেশটি ত্যাগ করেছে। ভিসা ছাড়াই প্রায় ৯০ দিন কাজাখস্তানে অবস্থান করতে পারেন রুশ নাগরিকরা।
সম্প্রতি ইউক্রেনের অধিকৃত ৪টি অঞ্চলে গণভোটে ৯৬ শতাংশ ভোট পাওয়ার পর বিজয় ঘোষণা করেছে রাশিয়া।দেশটির নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে তার অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে লেখেন, গণভোট শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ফলাফল পরিষ্কার’। এসময় তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়ায় স্বাগত’।
দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের প্রধান ডেনিস পুশিলিন, টেলিগ্রামে পোস্ট করে বলেন যে, তার অঞ্চলে ভোট গণনা সম্পন্ন হয়েছে। রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পক্ষে ভোট পড়েছে ৯৯ দশমিক ২৩ শতাংশ।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রিয়া নভোস্তি নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, খেরসন, জাপোরিঝিয়া এবং লুহানস্ক অঞ্চলেও নিরুঙ্কুশ বিজয় লাভ করেছে রাশিয়া। মস্কোর এই ঘোষণা যুদ্ধের একটি নতুন কৌশল এবং ইউক্রেন ও পশ্চিমাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের নতুন মোড় নিচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বুধবার এক বিবৃতিতে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ইউক্রেনের জন্য কিছুই পরিবর্তন করবে না’। অধিকৃত ভূখণ্ডে ‘রাশিয়ার এই প্রহসনকে গণভোটের অনুকরণও বলা যাবে না’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।