ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু পর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে রাশিয়ার উপর। নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়েছে আন্তর্জাতিকভাবে। এবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ উল্লেখ করে মার্কিন সিনেটে প্রস্তাব পাস হলো।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ হিসেবে নিন্দা জানাতে আনা প্রস্তাবে সর্বসম্মতি দিয়েছেন মার্কিন সিনেটের সদস্যরা।
বিরল ক্রসপার্টি ভোটাভুটিতে সিনেট সদস্যরা পুতিন ও তার সরকারের ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের বিষয়টি তদন্তের জন্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
নিন্দা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘ইউক্রেনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, সহিংসতা ও যুদ্ধাপরাধের নিন্দা জানাচ্ছে মার্কিন সিনেট। এই অপরাধ করছে রাশিয়ান বাহিনী।’
ভোটাভুটির আগে মঙ্গলবার ডেমোক্রেটিক সিনেট নেতা চাক শুমার সিনেটে বক্তৃতা দেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে ‘নৃশংসতা’ চালানোর জন্য পুতিনকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
এ প্রস্তাবটির উদ্যোক্তা রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমার পরবর্তী পদক্ষেপ হচ্ছে–আমাদের ব্রিটিশ মিত্রসহ একসঙ্গে কাজ করা। আশা করি, অন্যরাও এর সঙ্গে যুক্ত হবে। আমরা একটি ইন্টেল সেল তৈরিতে কাজ করব, যা যুদ্ধাপরাধে যুক্ত রুশ সামরিক ইউনিটগুল এবং তাদের কমান্ডারদের নাম প্রকাশ শুরু করবে।’ রাশিয়ানদের ‘নাম প্রকাশ ও লজ্জা দেওয়ার ক্যাম্পেইন শুরুর প্রক্রিয়া চলছে’ বলেও জানান লিন্ডসে গ্রাহাম।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
২০ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ২১তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
খবর বিবিসি