মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও হুমকি সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে আরও এস৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার পরিকল্পনা করছে তুরস্ক। এতে ন্যাটো মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ক্ষিপ্ত হবে জেনেও পিছু হটতে রাজি নন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কেবল তুরস্কেরই।
গত রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএস নিউজে প্রচারিত ‘ফেস দ্য ন্যাশন’ নামে একটি অনুষ্ঠানে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ভবিষ্যতে আমরা কোন দেশ থেকে কোন পর্যায়ে কোন ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনবো সে বিষয়ে কেউ নাক গলাতে পারবে না। এতে কেউই হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধু আমাদের।
রাশিয়ার কাছ থেকে অত্যাধুনিক এস৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার জেরে গত ডিসেম্বরে তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। সিএএটিএসএ (নিষেধাজ্ঞা আইনের মাধ্যমে মার্কিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই) আইন ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো কোনো মিত্র দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ঘটনা ছিল এটি।
রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার জেরে তুরস্কের শীর্ষ কয়েকজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা ও দেশটিকে এফ-৩৫ কর্মসূচি থেকে বাদ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপরও দমে যাননি তুর্কি প্রেসিডেন্ট। রাশিয়ার কাছ থেকে প্রথম ব্যাচের এস৪০০ সংগ্রহ করা পর দ্বিতীয় ব্যাচের দিকে হাত বাড়িয়েছেন তিনি।
সিবিএসের করেসপন্ডেন্ট মার্গারেট ব্রেনানের সঙ্গে আলাপকালে এরদোয়ান জানিয়েছেন কেন রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে উদ্যোগী হয়েছে তার দেশ। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি তাদের, এমনকি ১৪০ কোটি ডলার নেওয়ার পরও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের চালান হস্তান্তর করেনি ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই রাশিয়ার তৈরি এস৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহারের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। অত্যাধুনিক এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলোর জন্য হুমকি বলে মনে করে তারা। তবে তুরস্কের দাবি, ন্যাটো ও মিত্রদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হুমকিতে না ফেলেই স্বাধীনভাবে এস৪০০ ব্যবহার করা যেতে পারে।
এ বিষয়ে ফেস দ্য ন্যাশন অনুষ্ঠানে এরদোয়ানকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তারা আরও এস৪০০ কিনবেন কিনা। জবাবে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, অবশ্যই, অবশ্যই কিনবো।
আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে এরদোয়ানের। সেখানে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।