সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিগুলোতে পরিত্যক্ত সড়কগুলোতে ডুবে থাকা গাড়ি দেখা গেছে। মালয়েশিয়ায় প্রবল বৃষ্টিতে দেখা দেওয়া বন্যায় ১১ হাজারেরও বেশি লোক তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন, বহু সড়ক ও মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গেছে এবং দেশটির বৃহত্তম বন্দরের কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব জানান, বন্যায় আটকা পড়া লোকজনকে উদ্ধারে সহায়তা করতে ও তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে দমকল, সেনাবাহিনী ও পুলিশের ৬৬ হাজারেরও বেশি সদস্যকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবর থেকে মার্চের মধ্যবর্তী বর্ষাকালে মালয়েশিয়ায় বন্যা সাধারণ ঘটনা, বিশেষ করে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে; কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টি শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকে আর তাতে পশ্চিমাঞ্চলীয় সেলাঙ্গর রাজ্য বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে।
রাজধানী কুয়ালালামপুরকে ঘিরে থাকা সবচেয়ে সম্পদশালী এ রাজ্যটি সবচেয়ে জনবহুলও।
“এই মুহূর্তে সেলাঙ্গরের পরিস্থিতি কিছুটা বিশৃঙ্খল। অন্যান্য রাজ্যে, বর্ষার জন্য আগেই প্রস্তুতি নেওয়া হবে। কিন্তু সেলাঙ্গরে প্রায় হঠাৎ করেই এমনটি ঘটেছে,” বলেন প্রধানমন্ত্রী সাবরি।
তিনি জানান, রাজ্যটির প্রায় ৪ হাজার লোককে তাদের বাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বন্যার কারণে দেশটির বৃহত্তম বন্দর পোর্ট ক্লাংয়ের কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বন্যা ও ভূমিধসের কারণে বহু সড়ক ও মহাসড়কও বন্ধ হয়ে আছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিগুলোতে উপচে পড়া নদী, ভূমিধস ও পরিত্যক্ত সড়কগুলোতে ডুবে থাকা গাড়ি দেখা গেছে।
সেলাঙ্গরের শাহ্ আলম জেলার বাসিন্দা আশরাফ নুর আজম (২৬) জানান, পরিস্থিতি এত খারাপ হয়ে পড়বে তা ধারণাও করতে পারেননি তিনি, এক পর্যায়ে নিজের গাড়িটি মহাসড়কের পাশে ছেড়ে আসতে বাধ্য হন।
তিন জন লোক হাঁটছে, এমন একটি ভিডিও শেয়ার করে এক টুইটে তিনি বলেন, “চার ঘণ্টা আটকে থাকার পর কোনো সাহায্য না পেয়ে আর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষণ না দেখে আমরা বন্যার মধ্য দিয়েই হাঁটার সিদ্ধান্ত নেই।”
বন্যা পরিস্থিতি অনুসরণ করা সরকারি ওয়েবসাইট অনুযায়ী, মালয়েশিয়ার ১৬টি রাজ্য ও ফেডারেল অঞ্চলের মধ্যে ৮টিতে শনিবার পানির স্তর বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছিল।
রোববার পর্যন্ত সেলাঙ্গর, কুয়ালালামপুর ও আরও কয়েকটি রাজ্যে ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ।