আবু তাহের বাপ্পা : কোন কিছুকেই পাত্তা দিচ্ছেন না আব্দুর রহিম ভুঁইয়া। গণ মাধ্যমের কাছে তার সাফ জবাব কিছুই হবে না। তদন্ত হয়েছে। সেখানে কি হবে সেটা ডিপার্টমেন্টের ব্যাপার। এ নিয়ে গনমাধ্যমের এত মাথা ব্যাথার কি আছে। স্বাস্থ্য খাতে এটা খুব ছোট্র একটি ব্যাপার। চুনোপুটির পেছনে না ছুটে তিনি রাঘব বোয়ালদের ধরার পরামর্শ দেন মিডিয়া কর্মিদের।উল্লেখ্য, ২০১২ সালে রহিম ভূইয়ার কর্মস্থল মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে তিনটি আলট্রা সাউন্ড মেশিন যার দাম কম পক্ষে দেড় কোটি টাকা চুরি করে বিক্রি করে দেয় রহিম সিন্ডিকেট। হাসপাতালের স্টকের রিপোর্ট অনুযায়ী রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের জন্য সরকারী তহবিলের মাধ্যমে স্থানীয় ‘ওয়ার্সী সার্জিক্যাল’ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৪১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় একটি জি-হেলথ কেয়ার ইউএসএ কোম্পানির আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন কেনা হয়। পরের বছর একই কোম্পানির আরেকটি মেশিন ৪২ লাখ টাকায় কেনা হয়। যা হাসপাতালের ষ্টক লেজার পৃষ্ঠা নম্বর ৪৭ নম্বরে লেখা রয়েছে। একই বছর আরেকটি মেশিন জিটুজি পদ্ধতিতে চীন সরকারের অনুদান হিসেবে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মাধ্যমে মিটফোর্ড হাসপাতালে সরবরাহ করে। এটিও হাসপাতালটির ষ্টক লেজার পৃষ্ঠা নম্বর ৬৯ নম্বরে লেখা রয়েছে। ওই মেশিনটির দামও ৪৫ লাখ টাকা।
রেডিওলজি বিভাগের কর্মীদের সূত্র এবং কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সাধারণত প্রতিটি মেশিনের লাইফটাইম ধরা আছে ১০ বছর। ওই তিনটি মেশিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ ও ২০২৪ সালে। কিন্ত তিন বছর ব্যবহারের পরই সামান্য ইলেকট্রনিক সমস্যার পর মেশিনগুলো ফেলে রাখা হয় রেডিওলজি বিভাগে। গত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ওই মেশিনগুলো পরিত্যাক্ত বানানোর জন্য গোডাউনে পাঠিয়ে দেন রেডিওলজির বিভাগের প্রধান। সচল মেশিনগুলো পরিত্যক্ত দেখানোর কাজটি সম্পন্ন করেন ইনচার্জ সিনিয়র ষ্টাফ নার্স সোনালী। কাগজপত্র অনুযায়ী এগুলো স্টোরে রিসিভ করেন প্রধান সহকারী আব্দুর রহিম ভুঁইয়া। তবে ৩টি এক্সরে মেশিন গোডাউনে ঢুকলেও আল্ট্রাসাউন্ড ৩টি মেশিন বুঝে পাননি তৎকালীন ওয়ার্ড মাষ্টার বেলাল হোসেন।
তথ্যমতে, এ মেশিনগুলো দেড় কোটি টাকায় রাজিব নামের এক প্রকৌশলীর কাছে বিক্রি করে দেন রহিম ভূঁইয়াসহ তার সিন্ডিকেট। হাসপাতালের তদন্ত কমিটির পর মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় তাদের শাস্তির আওতায় আনতে নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়।সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে রহিম ভ’ইয়া সহ তার চক্রের আরো দু সদস্যকে শাস্তির আওতায় আনতে মিটফোর্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিস্তু এ সময় পর্যন্ত তাকে বা তার সিন্ডিকেটকে শাস্তির আওতায় আনা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে জানিয়েছে তারা মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছেন। এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে পরামর্শ করে কী পদক্ষেপ নেয়া যায় সেটা তারা ভাববে। এ দিকে তথ্য অনুসন্ধ্যানে জানা যায়,রহিম ভূইয়া একজস সাারণ কর্মচানি হলেও সরকারি মালামাল চুুরিকরে বিক্রির মাধ্যমে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। রাজধানী ঢাকাসহ নিজ এলাকা নোয়াখালীতে তিনি নামে বেনামে অনেক সম্পদ গেেছন। এ ছাড়ারাজধানীতে রয়েছে তার একাধিক আলীশান ফ্লাট। রাজধানীর অভিজাত এলাকা গ্রীণ রোডের কমফোর্ট হাসপাতালের পেছনের ভবনে আলীশান ফ্লাট রয়েছে তার। সেখানে তিনি বসবাস করেন। ফ্লাটটি সাজানো হয়েছে রুচিশীল নীলাভ আলোর মাধুরিতে।
ঢাকা ও নোয়াখালীর বেগম গঞ্জ এলাকার যত সম্পদ সবই আল্লাহ্’র নেয়ামত হিসেবে উল্লেক করে এই অসাধু কর্মকর্তা । জাতিয় অর্থনিতির থেকে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্দুর রহিম ভুঁইয়া বলেন, সবই আল্লাহ্’র দান লিখে কি করবেন, মন্ত্রনালয় অভিযোগ মন্ত্রনাল জমাদেওয়া হবে।
সংর্শ্লিষ্ট সূত্র বলছে, হয়তো কিছু দিনের মধ্যে লঘু দন্ডে দন্ডিত হবেন রহিম ভূ’ইয়াসহ তার চুরি সিন্ডিকেটের দু একজন । কিন্তু একজন অফিস সহকারির ব্যবসার নামে চুর সিন্ডিকেটের কাহিনী অজানা থেকে যাবে অনেকের কাছে আবার তার অঢেল বিত্তবৈভব ও রাজসিক জীবন যাপনের চিত্র তাকে কারো কারো চোখে দানবীর বড় স্যার বা বড় ব্যবসায়ী হিসেবেই প্রতিষ্ঠা করবে।
কারণ মন্ত্রণলয়ের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও তাদের বিরুদ্ধে কী শাস্তি নেয়া যায় তার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে পরামর্শের অপেক্ষায আছেন মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী রশিদ উন নবী।
এ দিকে মন্ত্রণালয়ের তদন্তে রহিম ভুউয়াসহ তার সিন্ডিকেট সদস্য বিল্লাল হোসেন, মাসুদ রানা সুমনসহ কয়েকজনের নাম উঠে এলেও সরকারি হাপাতালের যন্ত্র রাতের আধারে কিনে নেয়া রাজিবের বিরুদ্ধে কিছুই বলা হয়নি।