1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৪ পূর্বাহ্ন

মিললো শাহীন আলমের গোপন পরিচয়

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ, ২০২১

রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গতকাল সোমবার রাত ১০টা ৫ মিনিটে শাহীন আলমের মৃত্যু হয়। শাহীন আলমকে অন্যভাবে আবিস্কার করা গেল একজন হাউজ টিউটরের নবয়ান থেকে। যার বর্ণনায় উঠে এসেছে শাহীন আলমের মানবিকতার চিত্র।

কাজী মুশফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। সেই সময় পড়াতেন শাহীন আলমের ছেলেকে। যিনি ছাত্র থাকাকালীন শাহীন আলমের ছেলের গৃহশিক্ষক ছিলেন। তিনি নিজে ফেসবুকে লিখেছেন ‘সেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ দিকের কথা, আমার পড়াশোনার খরচ জোগানো বাবার পক্ষে খুব কষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো… তখন শাহীন আলম সাহেবের ছেলেকে পড়িয়ে নিজের খরচ চালাতাম। মগবাজারে ওনার বাসা ছিলো। তারপর চলে গেলেন নিকেতনের ঝকমকে ফ্ল্যাটে, আমি পরলাম মহাফাঁপরে। সেই জাহাঙ্গীরনগর থেকে আসতাম দুপুরের বাসে, আসাদগেট নেমে গুলশান-১ ট্যাম্পুতে তারপর হেঁটে নিকেতন… এখনকার মতো নিকেতন নয়, সবে শুরু হয়েছে বাড়ি ওঠা। সে গল্প থাক আত্মজীবনীর জন্য।’

গল্পে মুশফিকুর আরও লিখেছেন, ‘যখন বাচ্চাটাকে পড়িয়েছি বেশীরভাগ দিনই দুপুরের ভাত খাওয়াটা হতো না, সেই জাহাঙ্গীরনগরে ২.৩০ এর বাস ধরতে ছুটতে হতো। সেই জাহাঙ্গীরনগর টু নিকেতন। কাঁচা রাস্তা। মহাখালী ফ্লাইওভারের কাজ চলে… সে এক তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। পড়ানো শেষ করে ফিরতে হতো রাতে… যাক সে আলাপও থাক। একদিন শাহীন আলম সাহেব এর মা এসে দেখলেন চায়ের সাথে দেয়া গোটা কয়েক বিস্কুট এক নিমিষেই খেয়ে ফেলেছি, চরম ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত আমার সেদিকে কোন খেয়াল ছিলো না। পরদিন থেকে হঠাৎ রকমারি নাস্তা আসতো। রাক্ষুসে খিদেটা মিটতো। একদিন কালো স্যুট পরা শাহীন আলম সাহেব আমাকে রাতে নিকেতনের কাঁদাপানিতে ফিরতে দেখেন, আমি হন্তদন্ত হয়ে ৮টার বাস টার্গেট করে জোর কদমে হাঁটছি বলা ভুল হবে, দৌড়োচ্ছি… পরেরদিন ছেলের পড়া দেখতে আসবার ছলে অবজারভ করেন আমি সমুচা-রোল যা দেয় তা ঝাঁপিয়ে পরে খাই। পড়ানোর চেয়ে খাওয়ায় আমার আগ্রহ। কোনও কথা না বলে অন্য রুমে চলে যান।’

কাজী মুশফিকুরের স্ট্যাটাসে যেন মানবিকতার সাগর এক শাহীন আলমকে দেখা গেল। তিনি বললেন, তারপর থেকে মাস্টার্স দেয়া অবধি যতদিন ফাহিম সম্ভবত ছেলেটার নাম, পড়িয়েছি আমার জন্য বাহারি তরকারি দিয়ে ভাত আসতো নাস্তা হিসেবে। রাতে ওনার চকচকে গাড়িটা বেশিরভাগ দিনই আসাদ গেট নামিয়ে দিয়ে যেত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টার বাস ধরতে। বেতনও বাড়িয়ে দিলেন না চাইতেই! এমন অসীম মমতাবান একজন মানুষকে আপনারা চিনেন একজন অভিনেতা হিসেবে, অশ্লীল ছবিও করেছেন তিনি… আপনাদের হিসেবে। আর আমি চিনি একজন অভুক্ত মানুষকে পরম মমতার ছায়ায় আশ্রয়দাতা হিসেবে। আপনাদের হিসেবে কুলোবে না। শাহীন আলম আল্লাহতালা আপনাকে অনেক অনেক শান্তিতে রাখুক। আমিন।’

শাহীন আলম মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে এফডিসির ‘নতুন মুখের সন্ধানে’-এর মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান তিনি। তাঁর প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘মায়ের কান্না’, এটি ১৯৯১ সালে মুক্তি পেয়েছিল।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি