মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা একাত্ম হয়ে দেশটির সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। শনিবার সকাল থেকে দেশটির নেত্রী অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে তারা সড়কে নেমেছেন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করার পর দেশটিতে এখন তুমুল গণবিক্ষোভ চলছে। খবর রয়টার্সের
সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা জানান, স্বায়ত্তশাসনের বিষয়ে নির্বাচিত সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পূরণ হয়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনা অভ্যুত্থান চান না তারা।
বিক্ষোভকারীরা নির্বাচিত সরকার পুনরুদ্ধার, সুচি এবং অন্যদের মুক্তি এবং সামরিক তত্ত্বাবধানে তৈরি করা ২০০৮ সালের সংবিধান বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।
ইয়াঙ্গুনে সংখ্যালঘুদের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন নাগা সম্প্রদায়ের নেতা কে জং। তিনি বলেন, আমরা একটি ফেডারেল ব্যবস্থারও দাবি জানাচ্ছি। আমরা স্বৈরাচারের অধীনে একটি ফেডারেল দেশ গঠন করতে পারি না। আমরা জান্তা সরকারকে গ্রহণ করতে পারি না।
জং বলেন, আমাদের অবশ্যই এই লড়াই জিততে হবে। আমরা জনগণের সঙ্গে একসঙ্গে দাঁড়িয়েছি। একনায়কতন্ত্রের অবসান না হওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই করব।
মিয়ানমারে গত ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। তবে এনএলডি নিরঙ্কশ জয় পেলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তারা নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিন ভোরে সু চি ও দেশটির প্রেসিডেন্টসহ এনএলডির শীর্ষ বেশ কিছু নেতাকে গ্রেপ্তারের পর এক বছরের জন্য মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের পর গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও গ্রেপ্তার নেতাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে সাধারণ মানুষ। কিছু এলাকায় বলপ্রয়োগ করেছে কর্তৃপক্ষ। বিক্ষোভে গিয়ে গুলিবিদ্ধ এক নারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
এরই মধ্যে সু চির রিমান্ডের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন অভিযোগ এনে আটকে রাখা হয়েছে তাকে। মঙ্গলবার সামরিক জান্তার পক্ষ থেকে নতুন নির্বাচনের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।