এম রাসেল সরকার:
রাজধানীর মুগদায় কোন বাধা ছাড়াই আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে অনুমোদন হীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক। এসব প্রতিষ্ঠানে টাকার জন্য রোগীকে হয়রানি করা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মান নিয়ে অভিযোগ উঠছে হরহামেশা। অনকে সময় ভুল রিপোর্টের কারণে ভুল চিকিৎসা নিয়ে বিপাকে পড়ছেন রোগীরা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরদারিকে দুষছেন ভুক্তভোগীরা।
সরেজেমিন ঘুরে ও রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব কোনো চিকিৎসক, নার্স প্যাথলজিস্ট বা টেকনিশিয়ান নেই।
নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রতষ্ঠিানগুলো অবাধে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ঝুঁকিতে রয়েছেন রোগীরা। সরকারি কোনো তদারকি না থাকায় একশ্রেণীর অসাধু ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও দালাল চক্রের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সহজ-সরল রোগীদের প্রতিনিয়ত ঠকিয়ে যাচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে বেশিরভাগ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক চলছে চিকিৎসার নামে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা। কোনো কোনোটির লাইসেন্স থাকলেও সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছ এবং তা হালনাগাদ করা হয়নি। অনেক ক্লি¬নিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স পর্যন্ত নেই। অবৈধ ক্লিনিকগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানায় সরকারের আর্থিক লাভ হলেও জনগণের কোনো উপকারে আসে না। তাই মানহীন এসব ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়ার জোর দাবি সচতেন মহলের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডাক্তার বলনে, ডাক্তারদেরও অনুমোদনহীন ক্লিনিকে চিকিৎসা দিতে যাওয়া ঠিক নয়। অবৈধ কিংবা মানহীন ক্লিনিকগুলোকে শুধুমাত্র জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হলে হবে না, এগুলো বন্ধ করে দেয়া উচিত। সারা দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঘোষণা অনুযায়ী অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলেও প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম এখনও চলমান।
প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় নানা প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে। সূত্র জানায়, বর্তমানে একটি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও রোগ নির্ণয় কেন্দ্র পরিচালনার জন্য প্রায় ২১টি ভিন্ন ভিন্ন কতৃপক্ষের লাইসেন্স বা ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করে এসব লাইসেন্স যেমন পেতে হয়, তেমনি নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলে লাইসেন্সগুলো নবায়নও করতে হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়াও আর যেসব লাইসেন্স নিতে হয় তার মধ্যে রয়েছে ট্রেড, ফায়ার, ফার্মেসি পরিচালনা, পরিবেশ, জেনারেটর, ব্লাড ব্যাংক, ক্যাফেটিরিয়া ও লন্ড্রি, বিএসটিআই গভীর নলকূপ, আণবিক শক্তি কমিশন, মেডিক্যাল ম্যানেজমেন্ট ও নারকোটিক্স লাইসেন্স এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে অবাধে চলছে রাজধানীর মুগদায় অবৈধ এই প্রতিষ্ঠানগুলো।
প্রতিষ্ঠানগুলো হল “প্রাইমেট ডায়াগনষ্টিক সেন্টার (প্রাঃ) লিঃ” মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে “সান ডায়াগনস্টিক মুগদা” সুরাইয়া-হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক” সমর্ত ডায়াগনষ্টিক এন্ড ডক্টরস চেম্বার। ইতিমধ্যে অনিয়ম অব্যবস্থাপনার কারণে বেশ কয়েকটি ক্লিনিক প্রশাসন বন্ধ করলেও এই প্রতিষ্ঠানগুলো চলছে অবাধে।