ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকে জ্বালানি তেল-গ্যাস ও খাদ্যপণ্যের দাম। দিন দিন এই মূল্যস্ফীতি অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছালেও যুদ্ধ বন্ধের নাম নেই বরং তা দীর্ঘমেয়াদি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে। এ অবস্থায় উন্নত দেশগুলো যেমন মূল্যস্ফীতির চাপে নাকাল, তেমনি খাদ্যপণ্যের অভাবে দরিদ্র দেশগুলো দুর্ভিক্ষের আশঙ্কায় রয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের ওপরে উঠেছে, যা চার দশকে সর্বোচ্চ।যুক্তরাজ্যেও মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছাড়িয়েছে, যা চার দশকে সর্বোচ্চ। একইভাবে ইউরোপ, জাপান, তুরস্ক, ভারতসহ সব দেশেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নিলেও সক্ষম হচ্ছে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মূল্যস্ফীতির চাপ এতটাই ভয়াবহ যে এটি দেশ, এমনকি বিশ্বের গতিপথ বদলে দিতে পারে। যেমন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর নড়বড়ে হয়ে যাওয়া জার্মানির অর্থনীতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় ভার্সাই চুক্তি। এই চুক্তির কারণে তাদের দিতে হয় চরম খেসারত। জার্মানিকে পরিশোধ করতে হয় ১৩২ বিলিয়ন গোল্ড মার্ক সমমূল্যের ক্ষতিপূরণ। এই বিশাল অর্থের বোঝা জার্মানির অথনীতির চাকাকে রুদ্ধ করে, বেড়ে যায় মূল্যস্ফীতি। ভীষণ অর্থনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয় জার্মানিজুড়ে। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে দেশটি। হতাশায় নিমজ্জিত দেশটিতে তৈরি হয় সামাজিক অস্থিরতা।
পর পর দুটি সফল নির্বাচনও স্থীতিশীলতা ফেরেনি। উন্নতি হয়নি পরিস্থিতির। উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দেয় দেশটিতে। বেড়ে যায় বেকারত্বের হার। অনিশ্চয়তায় ডুবে যায় জার্মানি।