রেকর্ড লিগ ওয়ানের শিরোপা নিশ্চিতে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) প্রয়োজন ছিল মাত্র এক পয়েন্ট। তাই স্ট্রাসবুর্গের বিপক্ষে ড্র করলেই চলত প্যারিসিয়ানদের। শেষ পর্যন্ত করেছেও তাই। প্রথমার্ধে এগিয়ে যাওয়ার পর খেলা শেষের ১১ মিনিট আগে গোল খেয়ে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। পিএসজির হয়ে টানা লিগ শিরোপা জয়ে মেসি এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শিরোপাজয়ী ফুটবলার। তার ও ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী দানি আলভেজের শিরোপা সংখ্যা ৪২টি।
শনিবার (২৭ মে) স্ট্রাসবুর্গের মাঠ স্তাদে দি লা মেনিয়াওয়ে ১-১ গোলে ড্র করেছে পিএসজি। পিএসজির হয়ে গোল করেন লিওনেল মেসি। আর স্বাগতিকদের হয়ে তা শোধ দেন কেভিন গামেইরো।
প্রতিপক্ষের মাঠে এদিন বল দখলে এগিয়ে থাকলেও গোলের মতো সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ মেসি-এমবাপ্পেরা। উল্টো গোলের সুযোগ বেশি পেয়েছে স্ট্রাসবুর্গই। ম্যাচের ১০ম মিনিটে প্রথম সুযোগ পান কিলিয়ান এমবাপ্পে। তবে এগিয়ে এসে দলকে বাঁচিয়ে দেন স্বাগতিক গোলরক্ষক ম্যাটস সেলস।
পাঁচ মিনিট পর এগিয়ে যেতে পারত স্বাগতিকরা। পিএসজির খেলোয়াড়দের দুর্বল ব্যাকপাসের ফলে বল চলে যায় স্ট্রাসবুর্গের হাবিব দিয়ালোর কাছে। ছুটে গিয়ে দুরূহ কোন থেকে দারুণ শটও নিয়েছিলেন কিন্তু গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে পিএসজিকে রক্ষা করেন সার্জিও রামোস।
ম্যাচের ৩০ মিনিটে মেসির কর্নার থেকে রেনাতো সানচেসের নেয়া শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন স্বাগতিক গোলরক্ষক। এর আট মিনিট পর স্ট্রাসবুর্গের দিয়ালোর শট ফিরে আসে পিএসজির পোস্ট কাঁপিয়ে।
আক্রমণ প্রতি আক্রমণে গোল পায়নি কোন পক্ষই। তাই গোলশূণ্য থেকে বিরতিতে যায় দু’দল। বিরতি থেকে ফিরে ডেডলক ভাঙেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসি। ম্যাচের ৫৯তম মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পের অ্যাসিস্ট থেকে দলকে লিড এনে দেন লিওনেল মেসি। চলতি লিগে এটি তার ১৬তম গোল। এটি মেসির ক্যারিয়ারের ৬৯৯তম নন-পেনাল্টি গোল।
৭০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ নষ্ট করেন এমবাপ্পে। নিজের কারিকুরিতে বল নিয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকে যান মেসি। পেনাল্টি স্পটের কাছে ফাঁকায় থাকা ফরাসি ফরোয়ার্ডকে পাস দিলেও তিনি শট লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ হন। এরপর ম্যাচে সমতায় ফিরতে একের পর এক আক্রমণ চালায় স্বাগতিকরা।
ফলও ধরা দেয় হাতেনাতে। ম্যাচে ৭৯তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় স্ট্রাসবুর্গ। মর্গান সানসনের শট দোনারুম্মা ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও কাছে দাঁড়িয়ে থাকা পিএসজিরই ঘরের ছেলে কেভিন গামেইরো সহজেই বল জালে পাঠান। ম্যাচের ৮৬তম মিনিটে দারুণ দক্ষতায় এমবাপ্পের শট ঠেকিয়ে দলকে মূল্যবান এক পয়েন্ট এনে দেন স্ট্রাসবুর্গের গোলরক্ষক।
৩৭ ম্যাচ শেষে ২৭ জয়ে ৮৫ পয়েন্ট পিএসজির। সমান ম্যাচে ৮১ পয়েন্ট লেন্সের। তাই শেষ ম্যাচে যদি পিএসজি হারে ও লেন্স জয় পায় তবুও পিএসজিকে তাদের পক্ষে ছাড়িয়ে যাওয়া আর সম্ভবপর নয়। এটি পিএসজির টানা দ্বিতীয় ও সব মিলিয়ে ১১তম লিগ শিরোপা। তবে এই ড্রয়ের ফলে স্ট্রাসবুর্গের আগামী মৌসুমে লিগে টিকে থাকা নিশ্চিত হয়েছে। ৩৭ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে ১৫ নম্বরে আছে স্ট্রাসবুর্গ।
ঘটনাবহুল একটা মৌসুম শেষের পথে। ভাঙ্গন ধরেছে পিএসজির তারার মিছিলে। মেসি-নেইমারের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়েরও নিশ্চিত নন।