ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চাইছেন তাঁর দ্বিতীয় দফার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মধ্যে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনকারী মোটরযান চলাচল বাস্তবায়ন করতে।
এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বুধবার জানান, নানা কারণে চার দেশীয় ‘বিবিআইএন’ (বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল) মোটরযান চুক্তি বাস্তবায়নে দেরি হচ্ছে। ভুটানের সংসদ এখনো ওই চুক্তি অনুমোদন করেনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদি চাইছেন, ভুটান রাজি না হলেও অন্য তিন দেশের মধ্যে যান চলাচল শুরু করতে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় দফার মেয়াদের মধ্যেই সেই লক্ষ্য পূরণ করতে চান তিনি।
বিজ্ঞাপন
এ লক্ষ্যে তিন দেশের মধ্যে নয়াদিল্লিতে গত মঙ্গলবার একটি সম্পূরক চুক্তি সই হয়। বৈঠকে ভুটানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতা ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক এটিএম রকিবুল হক। ভারতের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব স্মিতা পন্থ। ভবিষ্যতে এই ব্যবস্থায় ভুটান আগ্রহী হলে তারাও মূল চুক্তি অনুসারে অবাধ মোটরযান চলাচলের শরিক হতে পারবে।
তিন দেশের মধ্যে সম্পূরক চুক্তি সই ছাড়াও দুটি ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ’ তৈরি হয়েছে। তারা কাস্টমস ও পরিবহন সংক্রান্ত যাবতীয় বিধিমালা তৈরি করবে। এই বিধিমালা তৈরি হলে ভুটানকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মধ্যে যাত্রী ও পণ্যবাহী অবাধ যান চলাচল শুরু হতে পারবে।
চতুর্দেশীয় ‘বিবিআইএন’ চুক্তি সই হয়েছিল ২০১৫ সালের জুন মাসে। কিন্তু প্রায় সাত বছর কেটে গেলেও চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি। বাস্তবায়িত না হওয়ার প্রধান কারণ, পরিবেশগত প্রশ্ন তুলে ভুটানের সংসদের অনুমোদন না দেওয়া। দ্বিতীয় কারণ, কোভিড–১৯ পরিস্থিতি।
ভারতের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ তিন দেশের মধ্যে যাত্রী ও পণ্যবাহী মোটরযান চলাচল সম্পর্কিত যাবতীয় বিধিমালা চূড়ান্ত করবে। অন্য ওয়ার্কিং গ্রুপ ঠিক করবে কাস্টমস– সংক্রান্ত বিধিমালা। তিন দেশের গাড়ি কোন কোন সড়ক ধরে চলবে, কোন কোন শহরের মধ্যে অন্য দেশের যান চলাচল করবে, নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত হবে, বিমার ব্যবস্থা কেমন হবে ও দায়িত্ব কারা নেবে, দুর্ঘটনা ঘটলে আপৎকালীন কী কী ব্যবস্থা গৃহীত হবে, দুই ওয়ার্কিং গ্রুপ সেসব চূড়ান্ত করবে। খুব দ্রুত এই কাজ শেষ হলে ত্রিদেশীয় অবাধ যান চলাচল শুরু হতে অন্তত এক থেকে দেড় বছর লাগবে।
ভারতের লোকসভার পরবর্তী নির্বাচন ২০২৪ সালের মে মাসে। অর্থাৎ এখনো দুই বছর বাকি। প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন তার আগেই এই চুক্তি বাস্তবায়িত হোক যা পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ়তর করবে।