মো: আনজার শাহ: ঐতিহ্যবাহী মৌকারা দারুচ্ছুন্নাত নেসারিয়া কামিল মাদ্রাসায় (২৬ সেপ্টেম্বর)সিনিয়র শিক্ষক মো:আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আনিত ভিত্তিহীন কাল্পনিক অভিযোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন অত্র মাদ্রাসার ছাত্ররা।
সিনিয়র শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিহিংসার কারনে কামিল মাদরাসার সাবেক ও বর্তমান ছাত্র পরিচয়ে কয়েকজনের প্ররোচনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা কাল্পনিক যে প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে আমি তার তীব্র প্রতিবাদ করছি। তাদের মিথ্যা অভিযোগের চ্যালেঞ্জ করে উপজেলা প্রশাসনের’ কাছেও আমরা ইতোমধ্যে আবেদন করেছি। যদি তাদের কোন অভিযোগ থেকেও থাকে তাহলে যথাযথ কতৃপক্ষের মাধ্যমে আমার কৈফিয়ত চাওয়ার তাদের অধিকার ছিল কিন্তু আমার জানামতে সে প্রক্রিয়ায় না গিয়ে হাটবাজ রে কথা বলা এবং সংবাদ সম্মেলন মানব বন্ধন করে উপজেলায় স্মারকলিপি প্রদান এটি মূলত কোন বিষয়ের যৌক্তিক সমাধানের ইচ্ছা নয় বরং ব্যাক্তিগত ভাবে আমার ইমেজ ক্ষুন্ন করার একটি চক্রান্ত। আমি এর নিন্দা করছি এবং এসব কল্পিত অভিযোগের যে কোন ধরনের শুনানীতে প্রস্তুত আছি। ছাত্র শিক্ষকদের উপর কোন ধরণের টর্চার, ক্ষমতার অনধিকারচর্চা অথবা কোন ধরণের দুর্নীতির সাথে আমার সংশ্লিস্টতা নাই। আমি এর প্রতিবাদ করছি।
মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, ১৯৯৬ সালে মরহুম পীর ছাহেব এর আমলে এ মাদরাস্তায় শিক্ষকতা আরম্ভ করি। আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা মাদরাসায় কামিল এবং সাধারনে বিএ বিএড, মাস্টার্স। একটি ফাযিল মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল পদে আমার নিয়োগ দেয়া হলেও মরহুম পীর ছাহেব কিবলার নির্দেশেই আমার যাওয়া না হয়ে এখানেই থাকতে হয়েছে। ২০০৩ সালে তার জীবদ্দশায় কামিল মাদরাসা, দীনিয়া মাদরাসা, হিফজখানা, ছাত্রাবাস সব মিলিয়ে দারুণকুন্নাত ওয়ালীয়া কমপ্লেক্স এস ৩২০৫ গঠিত হয়। হুজুর আমাকে কমপ্লেক্স সুপার হিসেবে দায়িত্ব দেন। কমপ্লেক্স এর কাগজপত্র আপডেট এবং প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের প্রস্ততকৃত হিসাব গ্রহন করা আমার দায়িত্ব। মরহুম ছুফি আব্দুল মান্নান তখন ক্যাশ রাখতেন। আমার বাড়ীঘর তখনকার সময়ে করা। ২০০৬ সাল হুজুর ইন্তিকাল করেন।
দীনিয়া মাদরাসা কমপ্লেক পরিচালিত হলেও এর ছাত্ররা আলীয়া থেকে বোর্ড পরীক্ষা দেয়। আলীয়া এবং নিজেদের মিশ্রিত সিলেবাস ও নিয়ম কানুন অনুসরন করা হয়। আমি আলীয়ায় আমার নির্ধারিত ঘন্টা করে বাকী সময় দীনিয়া পরিচালনা করি। এটি আমার অবৈতনিক দায়িত্ব। ট্রাস্টের পরামর্শে আলীয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মহোদয় সুয়োগ দেন। উল্লেখ্য মহিলা শাখায় আলীয়ার দুইজন একচেটিয়াভাবে রয়েছেন। আমিতো আলীয়ায় আমার ঘন্টা কারে থাকি। বর্তমানে দীনিয়ায় ছাত্র সংখ্যা আলিম পর্যন্ত ৪৭০ জন। এবছরও ষষ্ঠে ৬৬, সপ্তমে ৩৭, অষ্টমে ৬৬, নবমে ৪৪, দশমে ৪৭, আলিম১ন ২৪ ও আলিম ২৪ জন ছাত্র দীনিয়া থেকে আলীয়ায় রেজি: করেছে। এ জন্য আলীয়া থেকে কোন অনুদান নেয়া হয়না। দীনিয়া ছাত্রদের বেতন থেকে শিক্ষকদের প্রতিমাসে ১,৭০,০০০ টাকা বেতন দিতে হয়।
কমপ্লেক্স পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলির আয় ব্যয় স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রন করেন। প্রতিষ্ঠানের প্রধান রশিদ ভাউচার ব্যবহার করে হিসাব প্রস্তুত করে মাসের শেষে কমপ্লেক্স অফিসে পাঠান। ট্রাস্টের ডিজি অনুমোদন করেন এবং সুপার হিসেবে আমি পরবর্তীতে সামগ্রিক হিসাব প্রস্তুত করে ট্রাস্ট বোর্ড মিটিংয়ে উপস্থাপন করি। ট্রাস্টের পরিচালক অডিট হিসাব অডিট করেন। বাৎসরিক হিসাব বোর্ড সভায় অনুমোদন হয়। সর্বশেষ অডিট ফার্ম এর অডিট রিপোর্ট জয়েন্ট স্টক কার্যালয়ে জমা দেয়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় কোন অসুদপায় অবলম্বন করার কোন সুযোগ আমার নেই।
ছাত্রাবাস খাবার নিয়ে যে পর্যায়ের অভিযোগ করা হয়েছে বর্তমানে এটি মূলত ভিত্তিহীন। আগের তুলনায় বেশ পরিবর্তন হয়েছে। এরপরও আনফ প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সম্মিলিত উদ্যোগে পর্যায়ক্রমে সমাধান করতে হবে।
ভবন ব্যবহার ও অন্যান্য বিষয়গুলি আমার এখতিয়ার বহির্ভূত বিষয়। এগুলি ট্রাস্ট ও সকল প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত বিষয়। অভিযোগ আমলে নিয়ে যৌক্তিক দাবী সমাধানে ট্রাস্ট বোর্ড ও সকল প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহন করতে পারে।
লিল্লাহ টাকা পয়সা নিয়ে যে ধরনের ডামাডোল পিটানো হচ্ছে আসলে সেরকম নয়। আন্দোলনকারীদের কাছে যদি তাদের জানা মতে তাদের নিজেদের দেয়া অথবা তাদের মাধ্যমে দেয়া কোন তথ্য থাকে তাহলে সেটি যে কারো মাধ্যমে চেক করুক সেটি ব্যবহার অথবা অপব্যবহার হয়েছে কিনা। অনুমান নির্ভর কোন অভিযোগ দাড় করিয়ে পরিস্থতি ঘোলাটে করা প্রতিষ্ঠানের শুভাকাঙ্খীদের কাজ নয়। এটি দরবার ও প্রতিষ্ঠান বিরোধী গোষ্ঠির চক্রান্ত। ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধার ও প্রতিহিংসা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ইর্ষাপরায়ন ব্যাক্তিদের সংঘবদ্ধ একটি পদক্ষেপ।