রকেটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় স্থগিত করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসার মানুষকে চাঁদে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া বিষয়ক প্রকল্প আর্টেমিসের স্পেস লঞ্চ সিস্টেমের (এসএলএস) উৎক্ষেপণ।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩৩ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬ টা ৩৩ মিনিট) এই এসএলএস রকেটটির উৎক্ষেপণের কথা ছিল।
কিন্তু উৎক্ষেপণের ঘণ্টা দুই আগে রকেটটির ইঞ্জিন থেকে জ্বালানি লিকেজ সংক্রান্ত সমস্যা শনাক্ত হওয়ার পর উৎক্ষেপণ বাতিল করে নাসা কর্তপক্ষ। ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত মহাকাশে যত রকেট পাঠিয়েছে নাসা, সেসবের মধ্যে এসএলএস রকেটটি সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে শক্তিশালী। রকেটটির ইঞ্জিনের আয়তনই ১০০ মিটার।
নাসার মহাকাশযান উৎক্ষেপণ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক চার্লি ব্ল্যাকওয়েল বিবিসিকে বলেন, ‘উৎক্ষেপণের দুই ঘণ্টা আগে রকেটের ইঞ্জিন থেকে জ্বালানি নিঃসরণের এই সমস্যা ধরা পড়ে। ইঞ্জিনিয়ারা এই ত্রুটি সারাতে কাজ শুরু করেছেন।’
জ্বালানির লিকেজ সংক্রান্ত ত্রুটি ছাড়া রকেটটিতে আর কোনো সমস্যা এখনও ধরা পড়েনি উল্লেখে করে ব্ল্যাকওয়েল আরও বলেন, ‘চুড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আগামী ২ সেপ্টেম্বর উৎক্ষেপণ করা হবে রকেটটি।’
চাঁদে মানুষ প্রথমবারের মতো পা রাখে ১৯৬৯ সালে। নাসার অ্যাপোলো ১১ নামের একটি রকেটে করে ওই বছর চাঁদে গিয়েছিলেন তিন মার্কিন মহাকাশচারী— নীল আর্মস্ট্রং, অ্যাডউইন অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত আর কেউ চাঁদে গিয়েছেন— এমন রেকর্ড নেই।
সেই হিসেবে অর্ধশতাব্দি পর চাঁদে নভোচারি পাঠাতে নাসার এই উদ্যোগকে ‘নিঃসন্দেহে একটি বড় ঘটনা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
আর্টেমিস প্রকল্পের আওতাধীন এই রকেটটি ওরাইয়ন নামের একটি ক্যাপসুল বহন করবে। চাঁদের কাছাকাছি পৌঁছানোর পর রকেটটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে ওরায়ইন, তারপর চাঁদের চারপাশে পরিভ্রমণ করবে।
চাঁদে মানব নভোচারী পাঠানোর উদ্দেশে নাসার এই আর্টেমিস প্রকল্প শুরু হলেও এই যাত্রায় কোনো মানুষ পাঠানো হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নাস। যদি সবকিছু পরিকল্পনামাফিক চলে পরবর্তী মিশনগুলোতে মহাকাশচারীরা যোগ দেবেন।