আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সম্প্রতি ভারতের উত্তরপ্রদেশে ধর্মান্তরণবিরোধী অধ্যাদেশ জারি হয়েছে। এই আইনে গ্রেফতারও করা হয় ওয়াইস আহমেদ (২২) নামে বেরেলির এক যুবককে। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এবার অন্য ধর্মের বিয়েতে হস্তক্ষেপ করলো পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে লখনউতে।
জানা গেছে, সবার সম্মতি নিয়েই বুধবার বিয়ের আয়োজন করেছিল রায়না গুপ্ত (২২) ও মোহম্মদ আসিফের (২৩)। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। দুই পরিবারকে আইনের বিষয়টি বোঝালে তারা আইনি পদ্ধতি মেনেই পরে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ধর্ম পরিবর্তন না করে ‘বিশেষ বিয়ে’ আইনে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা বিয়ে করতেই পারেন। সে ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। কিন্তু কেউ ধর্ম পরিবর্তন করতে চাইলে বিয়ের ৬০ দিন আগে জেলা প্রশাসকের দফতরে একটি নির্দিষ্ট ফর্ম জমা দিতে হবে। শুধু তাই নয়, কোনো চাপ, প্রলোভন বা উসকানির কারণে যে কেউ ধর্ম পরিবর্তন করছেন না, সে কথা জানিয়ে বিয়ের ছয় মাসের মধ্যে আরও একটি ফর্ম জমা করতে হবে।
পুলিশের বক্তব্য, রায়না ও আসিফ বিষয়টি জানতেন না। তবে এ দিনের ঘটনায় কোনো এফআইআর দায়ের করা হয়নি।
এদিকে নতুন আইনে গ্রেফতার যুবক ওয়াইস আহমেদের বাবা মোহম্মদ রফিক (৭০) পুলিশের বিরুদ্ধেই দুই পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছেন।
বেরেলির পুলিশ আগে জানিয়েছিল, ধর্ম পরিবর্তন করে এক হিন্দু তরুণীকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল ওয়াইস। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও সম্প্রতি তরুণীর অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। তরুণীর বাবার অভিযোগ, তারপরই চাপ দিতে শুরু করে যুবক।
এক সাক্ষাৎকারে ওয়াইসের বাবা পাল্টা দাবি করেন, পুলিশি চাপের মুখে পড়েই তরুণীর পরিবার এফআইআর দায়ের করেছে। তার আরও অভিযোগ, ছেলের খোঁজে এসে তাকে মারধর করেছে পুলিশ।
তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, লাভ জেহাদের অভিযোগ শুধু দুঃখজনক নয়, ভয়েরও। মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে আমাদের কোনো বিবাদ নেই। তারা ভালো মানুষ।
ওয়াইসের গ্রেফতারের খবরে বিস্মিত তাদের প্রতিবেশীরাও। গ্রামপ্রধান ধ্রুব রাজ জানান, এপ্রিল মাসেই দুই পরিবারের মধ্যে বিষয়টি ‘মিটমাট’ হয়ে গিয়েছিল।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের নতুন এই অধ্যাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে দুটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাকারীদের আবেদন, ওই আইনে ব্যক্তি পরিসর এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।