কয়েক মাস আগে বাজারে আলুর দাম ভাল পাওয়ায় রংপুর অঞ্চলের কৃষকরা এবার বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। অনুকূল আবহাওয়ায় ফলনও ভাল হয়েছে। তবে দাম নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে কৃষক। তাদের ধারণা ফুলকপি-বাঁধাকপির মত আলুর দাম পড়ে গেলে হাজার হাজার কৃষক পথে বসবে।
অনেকেই বাড়তি লাভের আশায় ধার দেনা করে আলুর আবাদ করেছেন। এদিকে পাইকার নামধারী এক শ্রেণির মজুদদার সিন্ডিকেট কৃষকদের কাছ থেকে কমদামে আলু কিনে মজুদ করতে শুরু করছে।
রংপুর নগরীর অদূরে খাসবাগ এলাকার আসাদুজ্জামান ২ একর, আমিন মিয়া ৩ একর, রুবেল মিয়া ৪ একর, মকবুল হোসেন সাড়ে ৪ একর, দুলাল মিয়া ১০ একর, পীরগাছার কল্যানি ইউনিয়নের বুলবুল মিয়া ৩ একর জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। তাদের অনেকেই জমি থেকে আলু উত্তোলন করতে শুরু করেছেন। কিন্তু পাইকারি বাজারের আলুর দাম অনেক কম হওয়ায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
তারা জানান, বর্তমানে পাইকাররা প্রতি মণ আলু ৩৬০ টাকা থেকে ৩৮০ টাকায় ক্রয় করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে পুঁজি হারিয়ে তারা পথে বসবেন। এদিকে খুচরা বাজারেও প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজি। চাষিরা অভিযোগ করেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চাষিদের কাছ থেকে কম দামে আলু কিনে মজুদ করছে। কৃষকের ঘরে যখন আলু থাকবেনা তখন তারা কয়েকগুণ বেশি দামে ওই আলু বিক্রি করবে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় এবার ৯৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে আলুর আবাদ হয়েছে ৯৭ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি জমিতে এবার আলুর আবাদ হয়েছে।
উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৬৯০ মেট্রিক টন। সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ হয়েছে রংপুর জেলায়। এই জেলায় ৫৩ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। কৃষি অফিসের তথ্যমতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪৮ শতাংশ জমির আলু কৃষকরা ঘরে তুলেছে। পুরো আলু উত্তোলন হলে দাম আরও কমে যাওয়ার শঙ্কা করছেন চাষিরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যান বিশেষজ্ঞ মেসবাহুল ইসলাম বলেন, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে। ফলনও ভাল হয়েছে।