মোঃ আফ্ফান হোসাইন আজমীর, রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুরে টানা তাপপ্রবাহে অকালে ঝরে পড়ছে হাঁড়িভাঙা আমের গুটি। বৈরী আবহাওয়ায় আমের আকার ছোট হয়ে ফলন কম হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন আমচাষিরা।
আমচাষিদের ভাষ্য, আমের মুকুল আসার সময় পৌষ-মাঘ মাসে বৃষ্টি হওয়ায় বাগানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তার ওপর টানা খরা ও তাপপ্রবাহে আমগাছে পোকার আক্রমণ হয়েছে। ফলে ঝরে পড়েছে আমের গুটি। পোকা দমনে কীটনাশক ও সেচ দিয়েও খুব একটা কাজ হয়নি। ফলে আম উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রিয়াজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আমের মুকুল আসার সময় পরপর কয়েক দিন বৃষ্টি হওয়ায় প্রথম দফায় সমস্যা হয়েছে। আর এখন চলছে টানা তাপপ্রবাহ। দেশের অন্যান্য স্থানে বৃষ্টি হলেও রংপুরে বৃষ্টি নেই। এসব নানা কারণে হাঁড়িভাঙা আমের ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বুধবার সকালে মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ এলাকায় হাঁড়িভাঙা আমবাগানে গিয়ে আমচাষিদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর আমের গুটি কম এসেছে এবং খরায় আমের গোড়া শুকিয়ে ঝরে পড়েছে। বৃষ্টির প্রয়োজন হলেও নেই বৃষ্টি। প্রচণ্ড খরতাপ চলছে। এতে আম নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে আছেন তাঁরা।
খোড়াগাছ ইউনিয়নের আমচাষি আবদুল মান্নান এ বছর পৌনে তিন একর জমিতে আমবাগান করেছেন। তিনি বলেন, এবার আমের গুটিও কম হয়েছে। তার ওপর একটানা প্রচণ্ড গরম ও রোদের তাপে আমের গুটির গোড়া শুকিয়ে পড়ে গেছে।
একই এলাকার আমচাষি আখতার হোসেন এবার দেড় একর জমিতে আমের চাষ করেছেন। আমের গুটি রক্ষায় আমগাছের গোড়ায় পানি দিয়েছেন তিনি। আখতার বলেন, ‘এবার আমগাছে ফলন কম। আকারও খুব একটা বড় হবে না।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর জেলায় ৩ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙা আমের চাষাবাদ করা হয়েছে ১ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে। এ বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ হাজার মেট্রিক টন।
রংপুর আবহাওয়া দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, দেশের অন্যান্য স্থানে বৃষ্টি হলেও রংপুরে বৃষ্টি নেই। এক সপ্তাহ থেকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠানামা করছে।