রংপুর প্রতিনিধি : বাজারে আলুর দাম ভাল পাওয়ায় রংপুর অঞ্চলের কৃষকরা এবার বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৪ শতাংশ বেশি জমিতে এবার আলুর আবাদ হয়েছে। তবে শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে কৃষকরা আলুর আবাদ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। লেট ব্লাইট রোগ যাতে না ধরে এজন্য তারা এখন কোমর বেধে নেমেছে ক্ষেত পরিচর্যার কাজে।
রপুর কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় এবার ৯৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে আলুর আবাদ হয়েছে ৯৭ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি জমিতে এবার আলুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৬৯০ মেট্রিক টন। সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ হয়েছে রংপুর জেলায়। এই জেলায় ৫৩ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে কম আবাদ হয়েছে লালমনিরহাট জেলায় এখানে ৫ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে।
এছাড়া গাইবান্ধায় ৯ হাজার ২৫০ হেক্টর,কুড়িগ্রামে ৬ হাজার ৩৪৫ হেক্টর ও নীলফামারীতে ২২ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ থেকে শৈত্যপ্রবাহ, ঘন কুয়াশার কারণে আলু ক্ষেতে লেট ব্লাইট রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও লেট ব্লাইট রোগের পূর্বভাসও দেখা দিয়েছে। তাই কৃষকরা ক্ষেত রক্ষায় বিভিন্ন প্রকার ওষুধ প্রয়োগ করছেন।
রংপুর নগরীর অদূরে খাসবাগ এলাকার আমিন মিয়া ৩ একর, রুবেল মিয়া ৪ একর, মকবুল হোসেন সাড়ে ৪ একর, দুলাল মিয়া ১০ একর,পীরগাছার কল্যানি ইউনিয়নের বুলবুল মিয়া ৩ একর জমিতে আলুর আবাদ করেছেন।তারা জানান, গত মৌসুমে আলুর ভাল দাম পাওয়ায় এবার তারা বেশি করে আলুর চাষ করেছেন। কিন্ত গত কয়েকদিন থেকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তারা জানান, ইতোমধ্যে অনেকের জমিতে লেট ব্লাইট রোগ দেখা দিয়েছে। তারা কৃষি বিভাগের পরামর্শ মত ওষুধ প্রয়োগ করে ক্ষেত রক্ষার চেষ্টা করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (এলআর) কৃষিবিদ আবু সায়েম জানান, ঘন কুয়াশার কারণে আলু ও টমেটো ফসলে লেইট ব্লাইট (মড়ক রোগ) রোগের আক্রমণ হতে পারে। এ ধরণের আবহাওয়ায় আলু ও টমেটো ফসলে প্রতিরোধক হিসেবে মেনকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে। এ রোগের আক্রমণ দেখা দেয়ার সাথে সাথে আক্রান্ত গাছ তুলে মাটি চাপা দিতে হবে বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে এবং জমিতে সেচ দেয়া বন্ধ রাখতে হবে। সঠিক নিয়মে প্রতিষেধক দিতে হবে।