এবার পাল্টে গেছে দেশের বিভাগওয়ারি দারিদ্র্যের চিত্র। এখন আর রংপুর বিভাগ সবচেয়ে বেশি দারিদ্র্যপীড়িত নয়, বরিশাল বিভাগ সেই জায়গা নিয়ে ফেলেছে। দেশে দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি এখন বরিশাল বিভাগে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএ) তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগে দারিদ্র্যের হার ২৬.৯ শতাংশ।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জরিপের ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আগারগাঁওয়ের বিবিএস মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। সেখানে খানার আয় ও ব্যয় জরিপ ২০২২-এর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেছে।
জরিপ বলছে, উচ্চ ও নিম্ন দারিদ্র্যের বৃত্তে ঢুকে পড়েছে বরিশাল বিভাগ। ২০২২ সালে উচ্চ দারিদ্র্য রেখা অনুযায়ী বরিশাল বিভাগে দারিদ্র্যের হার ২৬.৯ শতাংশ এবং নিম্ন দারিদ্র্য রেখা অনুযায়ী দারিদ্র্যের হার ১১.৮ শতাংশ।
২০১৬ সালে রংপুর বিভাগে সর্বোচ্চ ৪৭ শতাংশ দারিদ্র্য হার ছিল। এখন সেখানে তা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। অন্যদিকে বরিশালে দারিদ্র্য বেড়ে দেশে সর্বোচ্চ হয়েছে।
বরিশালে দারিদ্র্য বাড়ার একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্মসচিব দীপংকর রায়।
তিনি বলেন, হয়তো মঙ্গার অভিবাসন হয়েছে। নদীর অববাহিকা ধরে তা বরিশালের দিকে গেছে।
দীপংকর রায় আরও বলেন, বরিশালে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সবচেয়ে বেশি। সেখানে দারিদ্র্য কমার কথা। আবার কেউ বলতে পারেন, বেশি দারিদ্র্য হার বলেই সেখানে সামাজিক নিরাপত্তা বেশি। এটি একটি আপেক্ষিক বিষয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি খুলনায় জেলায়। সেখানে বেশি দারিদ্র্য বাড়ার কথা। কিন্তু খুলনায় দারিদ্র্য কমেছে। অন্যদিকে শস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত বরিশাল বিভাগে দারিদ্র্য সবচেয়ে বেশি। ঢাকায় দারিদ্র্য বেড়েছে।
বিবিএসের জরিপ বলছে, গত ছয় বছরে ঢাকা, সিলেট ও বরিশাল বিভাগেও দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। ঢাকায় এখন দারিদ্র্যের হার ১৭.৯ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৫.৮ শতাংশ, রাজশাহীতে ১৬.৭ শতাংশ, সিলেটে ১৭.৪ শতাংশ, রংপুরে ২৪.৮ শতাংশ এবং ময়মনসিংহে ২৪.২ শতাংশ।
বর্তমানে দেশে সার্বিক দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ, যা ছয় বছর আগে ২০১৬ সালে ছিল ২৪.৩ শতাংশ। আর দেশে অতি দারিদ্র্যের হার এখন কমে ৫.৬ শতাংশ, যা ছয় বছর আগে ছিল ১২.৯ শতাংশ।