মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির ক্ষমতচ্যুত নেত্রী অং সান সু চি দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এলএনডি) সমর্থকরা। পাশাপাশি তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বিভন্ন সরকারি দফতরের কর্মীরা।
বুধবার সু চির দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মঙ্গলবার রাতে দরজা ভেঙ্গে এলএনডির অফিসে অভিযান চালিয়েছে সামরিক বাহিনী। দলটির কার্যালয় তছনছের অভিযোগ করা হয়েছে। দেশটিতে হাজার হাজার মানুষ যখন এনএলডিকে সরকার থেকে সরিয়ে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে আন্দোলন করছেন, তখন সু চির দলীয় দপ্তরে এ হামলার ঘটনা ঘটল।
এরপর থেকেই আন্দোলন আরো জোরদার হতে থাকে। বেশ কিছু শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
বিক্ষোভকারী তরুণ নেতা ইসথার জি ন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা নীরব থাকতে পারব না। আমাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলাকালে যদি রক্তপাত হয়, তবে আমরা তাদের দেশটি দখল করতে দিলে আরও রক্ত ঝরবে।’
এর আগে মঙ্গলবার নেপিদোতে পুলিশের রাবার বুলেটে তিনজন আহত হলেও রাজপথেই অবস্থান করছেন বিক্ষোভকারীরা। ওই বিক্ষোভে পুলিশ রাবার বুলেট, জলকামান, লাইভ রাউন্ড দিয়ে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, সামরিক সরকারকে ক্ষমতা থেকে না সরানো পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।
কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, পুলিশের রাবার বুলেটে আহত তিনজনের মধ্যে এক নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।মানবধিকার সংগঠন বলছে, ওই নারীর মাথায় গুলি লেগেছে। তবে এখন পর্যযন্ত কোন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। গেল সপ্তাহে কারফিউ জারির পরেও কয়েক হাজার মানুষ এই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করেছে।
এদিকে বুধবার জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের বেশ কিছু কর্মকর্তা অফিস থেকে বের হয়ে কাজে যোগ দেননি। তারা সামরিক সরকারের নিন্দা জানিয়েছেন। পাশাপাশি পার্লামেন্ট পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন।
বিক্ষোভকারীরা চিৎকার করে বলছিলেন, সামরিক অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, দেশটির সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেক নারী বিক্ষোভকারী রয়েছেন। তারা মুখে মাস্ক ও বিভিন্ন রকমের পোশাক পরে অবস্থান নিয়েছেন। তারা এসব পরে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
ইরাবতি নিউজ জানিয়েছে, সাস্থ্যকর্মীরা হাসপাতালের পরিহিত পোশাক ও মাস্ক পরা অবস্থায় মায়াবদ্দির কারান রাজ্যে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।
গত সপ্তাহে সোমবার ভোরে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের কাউন্সিলর ও নেত্রী অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্তসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটক করে। সু চি ও প্রেসিডেন্ট মিন্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে পুলিশ তাদেরকে ১৫ দিনের রিমান্ডে নেয়। এরপর থেকেই উত্থাল হতে থাকে মিয়ানমার।