বাসাবাড়ির পয়ঃবর্জ্য ড্রেনের মাধ্যমে লেক ও খালগুলোতে ফেলায় মাছের বদলে রাজধানীর সব লেক ও খালে মশার চাষ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
মশার বংশবৃদ্ধি ঠেকাতে বাড়িগুলোর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা পাইপে সরাসরি ড্রেনে না দিয়ে নিজেদের মতো ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বানিয়ে সেগুলোতে রাখতে বাড়িওয়ালাদের জানাতে কাউন্সিলরদের নির্দেশ দেন।
আজ রবিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে আয়োজিত ‘নিরাপদ পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এমন কথা বলেন।
ডিএনসিসি ওই সেমিনারের আয়োজন করে।
মেয়র বলেন, আমি নিজে গিয়েছি গুলশানে, বারিধারাতে, উনারা (বাড়ির মালিক) প্রত্যেকে বলেন, আমরা তো কানেকশন দিয়ে দিয়েছি। আপনারা কোথায় কানেকশন দিয়েছেন? আপনাদেরকে দেখতে হবে, আপনারা কানেকশন কোথায় দিয়েছেন। দেখা যাবে, সেই কানেকশনটা ড্রেনে গিয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, আপনাদের সুয়ারেজ যদি খালে গিয়ে পড়ে তাহলে যে লেকের মধ্যে মাছ থাকার কথা, ব্যাঙ থাকার কথা, সেগুলো কিচ্ছু থাকে না, নেই। আজকে লেকগুলোতে মাছ চাষ না করে, মশার চাষ হচ্ছে। বারিধারা লেক, গুলশান লেক, উত্তরা লেক, সব খালে মশার চাষ হচ্ছে। মাছের চাষ হচ্ছে না, মশার চাষ হচ্ছে।
মেয়র আতিক বলেন, বারিধারা লেকের সামনে গেলে মনে হয় যে কোন মানুষকে মশা উঠিয়ে দিয়ে যাবে। কারণ, সেখানে তো মাছের চাষ হয় না, মশার চাষ হয়। আমরা আমাদের পয়ঃবর্জ্যের কানেকশন ড্রেনের সঙ্গে দিয়ে দিচ্ছি, আর ড্রেনের পানি গিয়ে পড়ছে লেকে।
এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়ে মেয়র বলেন, কোনোভাবেই সিটি করপোরেশনের ড্রেনে কেউ পয়ঃবর্জ্য ফেলতে পারবে না। এই বার্তাটা আপনাদের শহরের প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে।
সেমিনারে দেখানো হয় কীভাবে বাসাবাড়ির পয়ঃবর্জ্য ড্রেনের মাধ্যমে লেকে পড়ছে, উপকারী কীটপতঙ্গ ও প্রাণী মারা যাচ্ছে। সেখান থেকে কাউন্সিলরদের জ্ঞান নেয়ার কথা বলেন তিনি।
মেয়র বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচানোর জন্য এটা আমাদের দরকার। অনেক দেশই এরকম ছিল, তারা কিন্তু ঠিক করে ফেলেছে। আমরা পারব না কেন?
সেমিনারে মেয়র রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন বলে জানান। তাদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, রাজউককে অবশ্যই বাড়ি নির্মাণের অনুমতি দেয়ার আগে দেখতে হবে, সে বাড়িতে সঠিকভাবে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট আছে কিনা। আমাদের পয়ঃবর্জ্য ও পয়ঃনিষ্কাশনের পানির আলাদা লাইন আছে কিনা। সেটা থাকতে হবে। তা ছাড়া এই শহরকে বাঁচানো অনেক কঠিন।