রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের ‘অবৈধ নিয়োগ’ কার্যক্রমের অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই তদন্ত কমিটি গঠন করে আদেশ জারি করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরকে আহ্বায়ক করে গঠিত চার সদস্যের কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. জাকির হোসেন আখন্দ এবং ইউজিসির পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) মোহাম্মদ জামিনুর রহমান।
আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে। তদন্ত প্রতিবেদনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ কার্যক্রমসহ আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ গতবছরের ১০ ডিসেম্বর প্রশাসনিক কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু উপাচার্য বৃহস্পতিবার অর্থাৎ তার শেষ কর্মদিবসে মন্ত্রণালয়ের উক্ত নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন মর্মে মন্ত্রণালয় অবহিত হয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, যা অনভিপ্রেত।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে কড়া পুলিশি পাহারায় ক্যাম্পাস ছেড়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভিসি অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। এসময় তার গাড়ির সামনে ও পেছনে ৩টি পুলিশের গাড়ি ছিল। উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে বিশ্ববিদালয় হাউজিং সোসাইটিতে (বিহাস) তার বাসায় উঠেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৭ মে দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। বৃহস্পতিবার তার শেষ কার্যদিবস ছিল। শেষদিন বিভিন্ন পদে ১২৫ জনকে অ্যাডহকে নিয়োগ দিয়ে গেছেন তিনি।
এদিকে সকাল থেকেই প্যারিস রোড, প্রশাসন ভবন, শহীদুল্লা কলা ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। সকাল থেকে সবার মুখে মুখে অ্যাডহকে নিয়োগের কথা ছড়িয়ে পড়ে।
দুপুর ১২টার দিকে মহানগর ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী শেখ রাসেল স্কুলের মাঠ থেকে প্যারিস রোডে শোডাউন দিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে আসেন। এরপর তারা প্রশাসন ভবনের পাশে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে অবস্থান নেন। এ সময় সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিপ্রত্যাশী সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, মাস্টাররোলের কর্মচারীর মুখোমুখি অবস্থায় চলে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রথমে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সেকশক অফিসার মাসুদের ওপরও হামলা চালান। পরে রাবি ছাত্রলীগ এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা হয়। এ সময় রাবি ছাত্রলীগ সংগঠিত হয়ে ধাওয়া করলে মহানগর ছাত্রলীগেরর সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে মহানগর ছাত্রলীগ পালিয়ে যায়।