গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতি করোনা সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ২৫ জন মারা গেছেন। দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পর রামেক হাসপাতালে এটিই সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২৮ জুন) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকাল ৯টার মধ্যে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা যান এই ২৫ জন। এর আগে গত ২৪ জুন মারা যান ১৮ জন। ওই সময় রামেক হাসপাতালে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড ছিল সেটি।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রামেক হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ২৫ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১২ জন মারা গেছেন হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে।
হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ) ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন করে মারা গেছেন। এ ছাড়া ২২ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন, ১, ১৬, ২৫, ২৯/৩০ নম্বর ওয়ার্ড এবং কেবিনে একজন করে মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে মারা যাওয়া তিনজন করে রাজশাহী এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার, দুজন নওগাঁর এবং একজন চুয়াডাঙ্গা জেলার বাসিন্দা ছিলেন। উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ১৬ জনের মধ্যে রাজশাহীর ৯ জন, নাটোরের তিনজন, নওগাঁর দুজন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুজন রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, ৪০৫ শয্যার রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি ছিলেন ৪৫৯ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন ১৮ জন।
করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৮২ জন। এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ২৩৪ জন। করোনা ধরা পড়েনি হাসপাতালে ভর্তি ৪৩ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭০ জন। এই এক দিনে হাসাপাতাল ছেড়েছেন ৫০ জন।
সোমবার (২৮ জুন) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ১৮৮ জনের এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে ৪৪৬ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে রামেক হাসপাতাল ল্যাবে ৬০ ও রামেক ল্যাবে ১৪৭ জনের নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।
পরীক্ষার অনুপাতে নওগাঁর ৩৮ দশমিক ০৯, রাজশাহীর ৩৬ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং চাঁপাইবাবগঞ্জে ১৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ নমুনায় করোনা ধরা পড়েছে।
গত ১ জুন থেকে ২৮ জুন সকাল ৯টা পর্যন্ত রামেক হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে মারা গেছেন ৩১৫ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৫৬ জনের। আর করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১৫৩ জন। এ ছাড়া করোনা হওয়ার পর অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় মারা গেছেন ছয়জন।