রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান নিজ ক্ষমতাবলে অবৈধভাবে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় তার পেছনে অন্য কারও প্রভাব পাওয়া যায়নি। আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটির সদস্যরা সুপারিশ করবেন। আগামী সপ্তাহে তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতে পারে বলে জানা গেছে।
রাবির সদ্য বিদায়ী উপাচার্য কেন নির্দেশনা অমান্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ে জনবল নিয়োগ কার্যকর করেছেন তার কারণ খতিয়ে দেখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এর পেছনে অন্য কারও হাত রয়েছে কি-না তাও দেখতে বলা হয়। গত ৯ মে চার সদস্য বিশিষ্ট এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানান, রাবি উপাচার্য নিজ ক্ষমতাবলে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহায়তায় নিয়মবহির্ভূত উপায়ে ১৩৭ জনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দিয়েছেন। সেই নিয়োগপত্রে বর্তমান রেজিস্ট্রার ও সহকারী রেজিস্ট্রার সই করেননি। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী অনিয়ম-দুর্নীতি ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জনবল নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করেন আব্দুস সোবহান। তার সঙ্গে কারা জড়িত, কেনই বা তিনি নির্দেশনা অমান্য করে নিয়োগ দিয়েছেন সেসব বিষয় খতিয়ে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে।
তারা বলেন, চার সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সরেজমিনে গিয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন। সেসব কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে। উপাচার্য নিজ ক্ষমতাবলে নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হবে।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে সব তথ্য সংগ্রহ করে তদন্ত কাজ শেষ করেছি। সেখানে উপাচার্যের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা প্রতিবেদন তৈরি করছি। আগামী সপ্তাহে তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।’
২০১৭ সালের ৭ মে দ্বিতীয় মেয়াদে রাবির উপাচার্য পদে নিয়োগ পান অধ্যাপক আব্দুস সোবহান। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে যোগ্যতা শিথিল করে মেয়ে-জামাতাকে নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। গত বছর ইউজিসির তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে রাবিতে সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। তবে চাকরির শেষ কর্মদিবসে সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে ১৩৭ জনকে নিয়োগ দেন এম আব্দুস সোবহান।
বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি ডেকে পাঠায় বিদায়ী এ উপাচার্যকে। কমিটির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি ওই ১৩৭ জনকে ‘মানবিক’ কারণে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।