1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫২ পূর্বাহ্ন

রাবির সাবেক ভিসির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : রবিবার, ২৩ মে, ২০২১

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ১৪০ জনের গণনিয়োগ বাতিল করতে সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত দল। সেইসঙ্গে রাবির বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানের বিদেশ ভ্রমণ ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।

রাবির বিদায়ী উপাচার্য আব্দুস সোবহান তার শেষ কর্মদিবসে অ্যাডহকভিত্তিতে এ গণনিয়োগ দিয়ে যান। ৬ মে নিয়োগ দেওয়া হলেও এর একদিন আগে ৫ মে নিয়োগপত্র ইস্যু করা হয়। এ নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ওঠে। সেদিনই শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ নিয়োগ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে।

রোববার সকাল ১১টার দিকে এ কমিটির প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে জমা দেওয়া হয়।

তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা গেছে, সাবেক উপাচার্যের আরেকটি দেশের নাগরিকত্ব রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়েছে বিধায় বিচারের আগেই পালিয়ে যেতে পারেন আশঙ্কায় এ সুপারিশ করা হয়েছে।

চার সদস্যবিশিষ্ট এ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর। এই কমিটির বাকি সদস্যরা হচ্ছেন- ইউজিসি সদস্য ড. মো. আবু তাহের, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মো. জাকির হোসেন আখন্দ ও ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ডিভিশনের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান।

রোববার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মুহম্মদ আলমগীরের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

কমিটি সূত্র জানায়, তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এভাবে ১৪০ জনকে নিয়োগ দিয়ে সাবেক উপাচার্য স্পষ্টতই আইন ও প্রশাসনিক রীতি-নীতি ভেঙেছেন। এ নিয়োগ দিতে গিয়ে তিনি অনিয়মের আশ্রয় নিয়েেছেন। নিয়োগের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করেছে তদন্ত দল। কমিটির প্রতিবেদনে নিয়োগের ঘটনায় প্রধান দায়ী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ড. এম আব্দুস সোবহানকে। এ ঘটনায় প্রধান সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তার জামাতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রভাষক এটিএম শাহেদ পারভেজকে। এছাড়া সংস্থাপন শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী, রেজিস্ট্রার শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার তারিকুল আলম ও পরিষদ শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন অর রশীদকে সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করেছে তদন্ত কমিটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঘটে যাওয়া এত বড় অবৈধ নিয়োগ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুই উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কেবল শেষদিনে গণনিয়োগ পাওয়া ১৪০ জন নয়, স্বজনপ্রীতি ও যোগ্যতা কমিয়ে নিয়োগ পাওয়া আরো ৩৪ জন শিক্ষকের নিয়োগও বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে এম সোবহানের দেওয়া ১৪০ জনের অবৈধ নিয়োগের সুবিধাভোগী বেশ কয়েকজন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই শিক্ষকদের স্ত্রী, সন্তান, জামাতাসহ বিভিন্ন নিকটাত্মীয় অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন। এজন্য অবৈধ এ নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদেরও পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে।

রাবি শিক্ষকদের অভিযোগ, গত ৩ মে রাতে সোবহানের জামাতা শাহেদ পারভেজের নেতৃত্বে সিনেট ভবন থেকে নিয়োগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি সরিয়ে ফেলা হয়। নথি সরানোসহ নিয়োগ প্রক্রিয়ার অন্যান্য কাজে উপাচার্য ও তার জামাতাকে সহায়তা করেন ইউসুফ আলী, তারিকুল আলম ও মামুন অর রশীদ নামে তিন কর্মকর্তা। ভাই ও সন্তানের নিয়োগ নিশ্চিত করতেই অবৈধভাবে দেওয়া গণনিয়োগে এ তিন কর্মকর্তা সহযোগিতা করেন বলে জানা গেছে। তিন কর্মকর্তার মধ্যে ইউসুফ আলীর স্বার্থ ছিল ছেলেকে চাকরি পাইয়ে দেওয়া। নিয়োগ তালিকা থেকে জানা যায়, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী পদে ৮৫ জনের তালিকার ৮২ নম্বরে আছেন সংস্থাপন শাখার এ ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর ছেলে নাহিদ পারভেজ। সিনিয়র সহকারী পদের বিপরীতে নিম্নমান সহকারী হিসেবে সংস্থাপন শাখায় নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। আর অন্য দুই কর্মকর্তার স্বার্থ ছিল ভাইয়ের নিয়োগ নিশ্চিত করা। এর মধ্যে তারিকুল আলমের ভাই মাসুম আল শামীম নিয়োগ পেয়েছেন প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের নিম্নমান সহকারী হিসেবে। নিয়োগ তালিকার ৭৫ নম্বরে আছে তার নাম। আর তালিকার ৬৮ নম্বরে থাকা শেখ ফারহানুল ইসলাম পরিষদ শাখার কর্মকর্তা মামুন অর রশীদের ভাই বলে জানা গেছে।

অবৈধ এ নিয়োগে রেজিস্ট্রার সই করতে না চাওয়ায় সংস্থাপন শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীকে দিয়ে সই করানো হয়। নিজের ছেলেও নিয়োগ পাওয়ায় তিনি খুশি মনেই এতে সই করেন

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি