সাইফুল ইসলাম, রামগড়: খাগড়াছড়ির রামগড়ে বাজার ফান্ডের রাস্তার গলি ও পাবলিক টয়েলেট (খাস)জায়গা অবৈধভাবে জবর দখল করে দোকান প্লট নির্মাণ করেছে বিশ্বজিৎ বডুয়া নামে এক ব্যাক্তি। আর এই দখলকে ঘিরে ব্যবসায়ীদের মাঝে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ।
সরেজমিন গিয়ে ব্যবসায়ীদের সুত্রে জানা গেছে, দখলধার বিশ্বজিৎ বড়ুয়া যে অংশ দখল করেছে সেটা হলো বাজারের ১ম গলি, ও এক গলি থেকে অন্য গলিতে চলাচলের রাস্তা ছিলো, দীর্ঘদিন এ জায়গা দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করাতে বাজারের গলিতে মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং গলির পাশে ছিল পাবলিক টয়েলেট বিশ্বজিৎ বড়ুয়া জাগায়টি দখল করাতে মানুষ টয়েলেট ব্যবহার করতে পারছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আর এ কাজে সহযোগিতা করেছে পুর্বের বাজার কমিটির সভাপতিসহ একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট! দীর্ঘ দিন ধরে এ বাজার সিন্ডিকেট চক্রের থাবায় ব্যবসায়ীরা অতিষ্ট হয়ে উঠলেও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের ভয়ে প্রতিবাদকারীরা তটস্থ ! ওই সিন্ডিকট চক্রটি এতই শক্তিশালী ছিলো যে তারা কারণে-অকারণে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে অহেতুক মিথ্যা তথ্য দিয়ে জেলা আ.লীগ নেতা কর্তাব্যক্তিদের ক্ষেপিয়ে নিজেরা লাভবান হয়েছে । পক্ষান্তরে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে অসহায় ব্যবসায়ীরা।এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাজারের ২০ থেকে ২৫ জন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন গত কমিটিগুলাতে প্রতিনিয়ত দলীয় লোকেরা এসে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করছে। বাজারের সামনে সরকারি (খাস) জায়গায় বছরের পর বছর খুঁচরা ব্যবসায়ীরা তরি তরকারি বেঁচা কেনা করতো। বাজারের এ খালি জায়গায় মালামাল, আনারস, আদা-হলুদ লোড-আনলোড করতে ট্রাক দাঁড়াত, এখন সেটি জবর-দখল হয়ে গেল। ফলে বাজারটি যেমন তার সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। তেমনি সরকারের কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত হলো। আর যে জায়গায় দখল করা হয়েছে এটা ছিলো পাবলিক টয়েলেট, বাজারে মানুষ আসলে টয়েলেট ব্যবহার করতে হয় মসজিদের, অচিরেই সরকারি ভূমি জবর-দখলের মহোৎসব বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
দখলধার বিশ্বজিৎ বড়ুয়া বলেন এখানে কোন পাবলিক টয়েলেট ছিলো না, আমি ৪৫ বছর যাবত এ জাগায়তে বসবাস করছি, ১৯৮৯ সালে বাজার ফান্ড বরাবর আবেদন করলে ডিসি আমার নামে বন্দবস্ত দেন, যাবতীয় কাগজপত্র আমার কাছে আছে। এদিকে জায়গা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখতে চাইলে বিশ্বজিত বড়ুয়া কোন কাগজ পত্র দেখাতে পারেননি।
বর্তমান বাজার কমিটি সুত্রে জানা গেছে যেখানে দোকান-প্লট করা হয়েছে এটা এক সময় বাজার গলি ছিলো, পাশে ছিলো পাবলিক টয়েলেট, কিভাবে বিশ্বজিৎ বডুয়া তার নামে করেছে তা আমরা জানিনা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি জেলা বাজার ফান্ডের পরিদর্শক ডালিম চাকমা জানান বাজার ফান্ডের জায়গায় কেউ দখল (স্থাপনা তৈরি) করতে চাইলে বা করলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেহুতু অভিযোগ উঠেছে তাহলে তার নামে বন্দবস্ত আছে কিনা তা দেখা হবে।
রামগড় বাজার চৌধুরী মংশেপ্রু চৌধুরী বলেন বাজারের গলি দখলের বিষয়টি একাধিক বার খাগড়াছড়ি জেলা বাজার ফান্ড কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। এবং বিশ্বজিৎ বডুয়ার নামে দখল ছাড়তে একটি উৎচ্ছেদ মামলা চলমান রয়েছে, তবুও তিনি কেন দখল ছাড়ছে না এটা আমি জানিনা।
বাজার চৌধুরীর প্রতিনিধি নেফাল বডুয়া জানান বিশ্বজিৎ বডুয়া যে জায়গা দখলে আছেন এটা একসময় বাজারের মানুষ চলাচলের গলি (খাস) ছিলো, ১৯৯১সালে বিশ্বজিৎ বডুয়া বন্দবস্ত নিতে একটি আবেদন করেছিল, কিন্তু তার নামে বন্দবস্ত হয়নি।
রামগড় পৌরসভার প্রতিনিধি মোঃ হারুন জানান বিশ্বজিৎ বডুয়া (বাপ্পি) যে ঘর নির্মাণ করেছে তা পৌরসভার অনুমোদন নাই।
খাগড়াছড়ি বাজার ফান্ডের সাবেক স্টাপ আবদুল মমিন জানান আমি চাকরিতে থাকাকালিন এজায়গা বিশ্বজিত বডুয়া তার নামে করতে অনেক চেষ্টা করেছে, কিন্তু করতে পারেনি, এখন কি অবস্থা জানিনা।
এবিষয়ে রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মিসেস মমতা আফরিন জানান সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে দখল করার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি নজরদারিতে আনা হচ্ছে।এবং কাগজপত্র দেখা হবে।