সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বক্তব্য মিথ্যাচার, শপথ লঙ্ঘনের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
সোমবার (২১ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে তার থাকার যোগ্যতা আছে কি না এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। উনি যদি তার বক্তব্যে অটল থাকেন তাহলে বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদে যাবে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা মতামত দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি স্ববিরোধিতা করছেন। তার এ পদে থাকার আর অধিকার নেই। ভাষণে তিনি বলেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। এখন আড়াইমাস পরে এ কথা কীভাবে বলেন? তিনি রাষ্ট্রপতি পদে থাকতে পারেন না।
এর আগে, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে অনুসন্ধান করেছেন দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী। পত্রিকাটির রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখে’ প্রকাশিত ‘উনি তো কিছুই বলে গেলেন না’ শীর্ষক প্রতিবেদনে তিনি তুলে ধরেছেন এর বিস্তারিত।
মতিউর রহমান চৌধুরী জানিয়েছেন, তার অনুসন্ধানে শেখ হাসিনার পদত্যাগের কোনো সরকারি বা দালিলিক প্রমাণ এখনো মেলেনি।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে বলেছেন, ‘শুনেছি তিনি (শেখ হাসিনা) পদত্যাগ করেছেন। তবে বহু চেষ্টা করেও পদত্যাগপত্র খুঁজে পাইনি। তিনি হয়তো জানানোর সময় পাননি।’
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সংবিধানের ৫৭ (ক) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, তার কাছে শেখ হাসিনার কোনো পদত্যাগপত্র বা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রমাণ পৌঁছায়নি।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর ৫ আগস্ট রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তিন বাহিনীর প্রধানদের সামনে রেখে বলেছিলেন- ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।’ রাষ্ট্রপ্রধানের এই দ্বিমুখী বক্তব্যে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজালের। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।