মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মানুষের আয় কমেছে। আবার চলতি মাসের মাঝামাঝি শুরু হওয়া নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে অনেকেই আয়কর রিটার্ন জমা দিতে কর অঞ্চলমুখী হয়নি।
এমন পরিস্থিতিতেও ব্যক্তি শ্রেণির আয়কর বিবরণী (রিটার্ন) জমার সংখ্যা বেড়েছে। বর্ধিত সময় শেষে গত অর্থবছর থেকে বেশি রিটার্ন জমা নেওয়ার আশা রাজস্ব বোর্ডর।
নভেম্বর মাসকে আয়কর রিটার্ন দেওয়ার মাস বা সেবা মাস হিসেবে পালন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মেলার আবহে করদাতাদের কাছ থেকে নেওয়া হয় রিটার্ন। তবে করোনার কারণে গত দুই বছর হচ্ছে না আয়কর মেলা।
মেলার পরিবর্তে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন সারাদেশের ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেলে মেলার মতো উৎসবমুখর পরিবেশে রিটার্ন জমা নেওয়া হচ্ছে।
রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে আয়কর রিটার্ন জমার চেয়ে চলতি বছরের নভেম্বরে ৫০ হাজার বেশি আয়কর রিটার্ন বেশি জমা পড়েছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) পর্যন্ত ১৪ লাখ ৪৯ হাজার ৫৩১ জন করদাতা আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন। আর সময় বৃদ্ধির আবেদন জমা পড়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৮৬টি। এসবের বিপরীতে আয়কর এসেছে ১ হাজার ২৫০ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
ব্যবসায়ী ও করদাতাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিনে জমা দেওয়ার সময় আরও এক মাস বৃদ্ধি করে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করার ঘোষণা আসে। এনবিআরের পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মুমেন জাগো নিউজকে এই তথ্য জানান।
রাজস্ব বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, দেশে টি-আই এনধারীর সংখ্যা ৭০ লাখ। সেই হিসাবে এখনো আয়কর রিটার্ন জমা দেননি প্রায় ৭৯ শতাংশ করদাতা। এর আগে ২০২০-২১ করবর্ষে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ ৪২ হাজার করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছিলেন। তখন রিটার্ন দাখিলের জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন জমা পড়ে ১ লাখ ৫০ হাজারটি। যদিও সব মিলিয়ে গত অর্থবছরে ২৪ লাখ করদাতার আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নতুন করে সময় বৃদ্ধি ও জরিমানা দিয়ে রিটার্ন দাখিলের আবেদন বিবেচনা করলে জানুয়ারিতে গিয়ে রিটার্ন দাখিল ২৫ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে, যা গত বছরের তুলনায় ১ লাখ বেশি।
এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (জরিপ, কর ফাঁকি ও আইটিপি রেজি. কর-১৫) দীপক কুমার পাল জানান, চলতি বছর করদাতাদের জন্য অনলাইনে নতুন আয়কর রিটার্ন ফাইলিং সিস্টেম চালু করেছে এনবিআর। ফলে করদাতা সহজেই ঘরে বসে রিটার্ন দিতে পারছেন।
জানা গেছে, গত অক্টোবরে পরীক্ষামূলক চালু হওয়া অনলাইন মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছেন। নিবন্ধন নিয়েছেন ৯০ হাজার করদাতা।