” স্যার আমার সিটটা দিয়া দেন। বাড়িতে ২ মাসের বাচ্চা। আজ কাম না করলে না খাইয়া থাকমু স্যার ” দৃশ্যটি গাজীপুর জয়দেবপুর রেলক্রসিং এর দৃশ্য। বিভিন্ন অটোরিকশা গাড়ির সিট নিয়ে একটা পিকাপ রেলক্রসিং এর চেকপোস্টের সামনে থামে। দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা কঠোর পাহাড়ায়। পিছনেই সিট বিহীন গাড়িতে এক মধ্য বয়সী ছেলের আকুতি। সেই আকুতি সিট ফিরে পাবার জন্য। কান্না জরিত কণ্ঠের সেই আকুতি শুনলে মন গলবে যে কারো। কিন্তু দ্বায়িত্বে অনঢ় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর মন তেমন গলছে না। আর কতই বা গলবে? তাদেরও তো সব সামাল দিতে হয়।
জিগ্যেস করে জানতে পারলাম ছেলেটির নাম জুয়েল, বাড়ি লক্ষিপুরা গাজীপুর সিটির ২৭ নং ওয়ার্ড। দুই ছেলে তার, ৮ বছর ও ২ মাস বয়সের। পরিবার কঠিন লকডাউনের কারনে একপ্রকার অনাহারে আছে তাই বাধ্য হয়েই গাড়ি নিয়ে বের হয়েছে। এমন স্বপ্ন হারা মানুষগুলোর কাছে করোনার চেয়েও লকডাউন বেশি ভয়ংকর বলে তারা জানান।এমন বুকফাটা আহাজারি দেখতে হলে বেশি দূর যেতে হয় না, বেশি সময় অপেক্ষায়ও থাকতে হয় না। লকডাউনের কারনে বিভিন্ন চেকপোস্টে নজর রাখলেই দেখা মিলবে এই আহাজারি করা মানুষদের। যারা একমুঠু খাবারের জন্য, সন্তানদের মুখে একটু খাবার তুলে দেওয়ার জন্য কঠোর লকডাউন ভেঙ্গে রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছে। আর এভাবেই তারা হারাচ্ছে তাদের রিজিকের শেষ আশা টকু।
সমসাময়িক লকডাউনের বিষয় নিয়ে কথা হয় পুলিশের দ্বায়িত্ব পালনরত সার্জেন্ট মোঃ শাহ নেওয়াজে এর সাথে। তিনি বলেন মানুষ মানতে চাচ্ছে না লকডাউন। তারা বের হচ্ছে ইচ্ছে মতো এবং নানান কারন দেখিয়ে পার হয়ে যাচ্ছেন। বড় গাড়ি না চলাতে অটোরিকশা এখন রাস্তায় অনেক। আমরা যথাযথ ভাবে চেষ্টা করছি পরিবেশ ঠিক রাখতে। কিন্তু অনেকেই অভাবের তারনায় রাস্তায় বের হয়। তাই সব দিক বিবেচনা করেই দ্বায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। হয়তো পরিবেশ ঠিক রাখতে অনেক সময় কঠোরতা দেখাতে হয়। যাতে করে মানুষের মাঝে সচেতনতা ফিরে আসে এবং এই করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকা যায়।