লক্ষ্মীপুরঃ লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্প নগরীর চলমান একটি ঘি কারখানায় তালা দেওয়ার ঘটনায় আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল (সদর) আদালতে প্লটের অংশীদার শষী ভূষন নাথের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে ভূক্তভোগী কারাখানার মালিক আলমগীর হোসেন সেলিম সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাদীর আইনজীবী রেজাউল করিম রাজু পাটওয়ারী বলেন, আদালতের বিচারক রায়হান চৌধুরী মামলাটি আমলে নিয়েছেন। ৩ জুনের মধ্যে ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত ২২ মার্চ শষী ভূষন নাথ ওই কারখানার মূল ফটকসহ প্রত্যেকটি দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। এতে একমাসে প্রায় ৫-৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভূক্তভোগী আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন।
ভূক্তভোগী আলমগীর সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের চররুহিতা গ্রামের মৃত সামছুল ইসলামের ছেলে। অভিযুক্ত শষী ভুষন একই উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের খোয়া সাগর দীঘির পাড়র এলাকার মৃত গৌর সুন্দর নাথের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্প নগরীর ৩৩ নম্বর প্লট রেজিস্ট্রিকৃত লিজ দলিল অনুযায়ী শষী ভূষন নাথ ও সুবীর কুমার নাথের মালিকানায় রয়েছে। ২০১০ সাল থেকে সেখানে কোকানাট অ্যান্ড এডিবল ইন্ডাস্ট্রিজ করে শষী ভূষন ব্যবসা করে আসছে। ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ায় ২০১৬ সালে ২২ ডিসেম্বর ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায় অংশীদারিত্ব বিক্রি করার জন্য আলমগীর হোসেনের সঙ্গে বায়না চুক্তি করা হয়। এজন্য বিভিন্ন সময় শষী ভুষনকে ৯ লাখ টাকা দেওয়া হয়। ওই কারখানা ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার করে মেসার্স সুমাইয়া ফুড প্রোডাক্টস নামে ঘি’র ব্যবসা শুরু করে। চুক্তির কিছু দিনের মধ্যেই বাকি টাকা নিয়ে জমি আলমগীরের নামে রেজিস্ট্রি করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। বর্তমানে শষী ভূষন তার অন্য অংশীদার সুবীরের সঙ্গে যোগসাজসে আলমগীর থেকে কারখানাটি নিয়ে নেওয়া চেষ্টা করছে।এনিয়ে বিসিক শিল্প নগরী কর্তৃপক্ষ ও বিসিক শিল্প নগরী ব্যবসায়ীক সমিতির কাছে বিভিন্ন অভিযোগও করেছে তারা। এতে আলমগীর তার কাছ থেকে নেওয়া ৯ লাখ টাকা ও কারখানা সংস্কারের ৮ লাখ টাকা ফেরত চেয়েছে। কিন্তু শষী ভুষন দেবে না বলে জানিয়ে দেয়।
ভূক্তভোগী আলমগীর হোসেন বলেন, শষী ভুষন এখনো আমার অংশীদারিত্ব রেজিস্ট্রি করিয়ে দেয়নি। তিনি আমার সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। ২২ মার্চ কারখানায় শষী ভূষন তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় গত একমাসে আমার ৫-৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমার থেকে কারখানা নিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আমার অংশীদারিত্ব রেজিস্ট্রি করে দিতে হবে, তা না হলে আমার টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে।
এ ব্যাপারে শষী ভূষন নাথ বলেন, প্লটে আমরা দুইজন অংশীদার রয়েছি। সুবীরে অংশটি বিক্রি করার জন্য আলমগীরের সঙ্গে বায়না চুক্তি হয়। গত ৫ বছরে তিনি আমাকে ৬ লাখ টাকা দিয়েছে। কারখানা সংস্কারে তিনি ২ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। পুরো টাকা না দেওয়ায় তাকে অংশীদারিত্ব রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়নি। এখন সুবীরও অংশীদারিত্ব বিক্রি করতে চাচ্ছে না। ব্যবসায়িক সমিতির নির্দেশে আমি কারখানায় তালা দিয়েছি। আলমগীর অযৌক্তিক দাবি করায় তার টাকা দেবো না বলেছি।