আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে পশ্চিমাঞ্চলে এখনও নিয়ন্ত্রণভাবে বেড়ে চলেছে নজিরবিহীন দাবানল। ইতোমধ্যেই সেখানে আগুনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ জনে। প্রাণ বাঁচাতে শুধু ওরেগন অঙ্গরাজ্যেই ৪০ হাজার বাসিন্দাকে বাধ্যতামূলক ঘরছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এভাবে আশ্রয় হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন পশ্চিমাঞ্চলের আরও পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে এবারের দাবানলের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী ওরেগন। ইতোমধ্যেই সেখানকার কয়েক হাজার ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শুধু চলতি সপ্তাহেই অঙ্গারাজ্যটিতে আগুনে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় গভর্নর কেট ব্রাউন জানিয়েছেন, সেখানে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ এ অঞ্চলের তিনটি কাউন্টিতে এখনও কয়েক ডজন মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
বিপদ এখানেই শেষ নয়। দাবানলের কারণে সৃষ্ট ধোঁয়ায় ঢেকে আছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের বিশাল এলাকা। ফলে গোটা আকাশ লাল-কমলা বর্ণ ধারণ করে সৃষ্টি করেছে এক রহস্যময় পরিবেশ। দেখতে সুন্দর হলেও এমন আবহাওয়া খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয়। ক্যালিফোর্নিয়া, ওরেগন, ওয়াশিংটনের বেশ কিছু এলাকায় ধোঁয়ার কারণে সৃষ্ট দূষণ বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস।
আবহওয়া পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট পার্পলএয়ারের তথ্যমতে, দুই পাশে বিশাল দু’টি অগ্নিকাণ্ডের মাঝে পড়া ক্যালিফোর্নিয়ার প্যারাডাইস শহরের বায়ুদূষণ বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে শহরটির স্কোর দাঁড়িয়েছে ৫৯২ পয়েন্ট।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম জানিয়েছেন, গত তিন সপ্তাহে শুধু তার অঙ্গরাজ্যেই ৩ হাজার ৯০০ বাড়ি ও স্থাপনা দাবানলে ধ্বংস হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ডের কারণ খুঁজতে তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
পোর্টল্যান্ড থেকে মাত্র ২৫ মাইল দূরবর্তী মোলাল্লা এলাকার নয় হাজার বাসিন্দাকে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩০ জন নিজের বাড়ি ছাড়তে রাজি হননি বলে জানিয়েছে স্থানীয় দমকল অধিদপ্তর।
আগুনের কবলে ওয়াশিংটনে প্রাণ হারিয়েছে এক বছরের একটি শিশু, গুরুতর আহত হয়েছে তার বাবা-মা। এছাড়া উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলে প্রাণ কেড়েছে অন্তত ১০ জনের, নিখোঁজ রয়েছেন ১৬ জন। ভয়াবহ এ দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে দিনরাত প্রাণপণ লড়ে যাচ্ছেন ১৭ হাজারেরও বেশি দমকলকর্মী।