পরিবেশকর্মী, সমাজকর্মী, রাজনীতিবিদ সুচেতনা ভট্টাচার্যকে ভারতের পশ্চমবঙ্গের মানুষ এই পরিচয়গুলোতেও চেনেন। পাশাপাশি তিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর কন্যা। কিন্তু নিজের এই ‘কন্যা’ পরিচয় তিনি আর রাখতে চান না। নিজেই জানিয়েছেন, তিনি লিঙ্গান্তর করে ‘সুচেতন’ হতে চলেছেন।
রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হলেও সক্রিয় রাজনীতিতে কোনও দিন খুব সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেননি সুচেতনা। বরং পরিবেশকর্মী হিসেবেই বেশি দেখা গেছে তাকে। প্রেসিডেন্সি কলেজের এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্রী সেভাবেই নিজের পরিচয় তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তার নিজের লিঙ্গপরিচয় নিয়ে নাকি সন্তোষ ছিল না। আর সেই কারণেই বহু দিন ধরেই নাকি তিনি লিঙ্গান্তের কথা ভাবছিলেন।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম ২৪ ঘণ্টার একটি রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, সুচেতনা নাকি এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুটা এগিয়েও গেছেন। তিনি নাকি ইতোমধ্যেই মনোবিদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছেন। এর পরে চিকিৎসা সংক্রান্ত বাকি কাজও হওয়ার কথা।
কিন্তু কীভাবে এই বিষয়টি প্রকাশ্যে এল? হালে এলজিবিটিকিউ-এর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন সুচেতনা। সেখানেই তিনি নিজের এই মনোভাবের কথা জানিয়েছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। আর তার সঙ্গে নতুন নামের কথাটিও নাকি বলেছেন।
এর পরে সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮-কে সুচেতনা এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি মানসিকভাবে দীর্ঘ দিন ধরেই ‘ট্রান্স ম্যান’। এবার তিনি শারীরিক ভাবেও সেটি হতে চান। এই সংবাদমাধ্যমের কাছে তার বক্তব্য, ‘আমরা সমাজের মূল ধারারই মানুষ। আমাদের আলাদা চোখে দেখবেন না।’
সুচেতনার সম্পর্কে এই কথা ছড়িয়ে পড়ার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, বামপন্থী পরিবারের সদস্য হওযার কারণে অল্প বয়স থেকেই তার মধ্যে স্বাধীন এবং উদার চেতনা ছিল। নিজের মতামত জানাতে তিনি কখনও আপস করতে পছন্দ করতেন না। এই সিদ্ধান্ত বৈপ্লবিক না হলেও, তিনি যে সামাজিক অবস্থান থেকে এসেছেন, সেখানে দাঁড়িয়ে এটি উদাহরণ যোগ্য তো বটেই।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস