আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। এ উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে নানা সংগঠনসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
সকাল সাড়ে ৬টার পর সর্বসাধারণের জন্য স্মৃতিসৌধ এলাকা উন্মুক্ত করে দেয়ার পরেই এখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন নানান শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মানুষ।
আজ মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দিবসের প্রথম প্রহর সকাল ৫টা ৫৬ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ সময় এক মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে নীরবতা পালন করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। পাশে বেজে ওঠে বিউগলের করুণ সুর। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অফ অনার দেয় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল।
এ সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান ও ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় তার পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ আরও অনেকে।
এদিকে ভিআইপি যাতায়াতের কারণে ভোর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
সকাল সোয়া ৬টায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধ ত্যাগ করার পর মহাসড়ক ছেড়ে দেওয়া হয় এবং সবার জন্য স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে প্রবেশ করেন স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে।
রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, সমাজকর্মী, সরকারি-বেসরকারি চাকুরে, শিল্পী-বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, পেশাজীবী, শ্রমিক, শিক্ষার্থী, সর্বোপরি সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত শ্রদ্ধার পুষ্পাঞ্জলিতে ঢেকে যায় সৌধের শহিদ বেদি।
দিনটি উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ চত্বর নানা সাজে সাজানো হয়েছে। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য প্রতিটি ইট ঘষে-মেজে ব্যবহার করা হয়েছে খয়েরি ও সাদা রং। আর আলোকসজ্জা করা হয়েছে সৌধ চত্বর এলাকায়। পানি পাল্টিয়ে নতুন করে পানি দিয়ে ভরে ফেলা হয়েছে কৃত্রিম হৃদটি। এলাকার আকর্ষণ বাড়াতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে পানির ফোয়ারাটিও। ভোর থেকে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণজুড়ে দেশাত্ববোধক গানের সুর বাজতে থাকে।