ঘোষণা করা হয়েছে ২০২১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম। এ বছর বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মানজনক এ পুরস্কার জিতেছেন ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা এবং রাশিয়ার সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভ। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য দুঃসাহসিক লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।
শুক্রবার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় নরওয়ের রাজধানী অসলোতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শান্তিতে নোবেলজয়ী দুজনের নাম ঘোষণা করে নোবেল কমিটি।
তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘গণতন্ত্র ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তির পূর্বশর্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সুরক্ষায় ভূমিকা রাখায় মারিয়া রেসা ও দিমিত্রি মুরাতভকে এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি।’
নোবেল কমিটি এ যুগলকে ‘এমন ভূমিকা রাখা সব সাংবাদিকের প্রতিনিধি’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
রেসার ব্যাপারে কমিটির তরফ থেকে বলা হয়, ফিলিপাইনের অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘র্যাপলার’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা রেসা তার মাতৃভূমি ফিলিপাইনে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার, সংঘাত বাঁধিয়ে দেওয়া এবং ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদের উন্মোচনে’ মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ব্যবহার করে প্রশংসনীয় স্থান লাভ করেছেন।
অন্যদিকে মুরাতভের বিষয়ে বলা হয়, ‘নোভাজা গাজেতা’ পত্রিকার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও টানা দুই যুগের প্রধান সম্পাদক মুরাতভ ‘ক্রমবর্ধমান প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও’ কয়েক দশক ধরে রাশিয়ায় বাকস্বাধীনতা রক্ষায় লড়াই চালিয়ে আসছেন।
মনোনীত ৩২৯ জনের মধ্য থেকে বিজয়ী এ দুই সাংবাদিক ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা (১১ লাখ ডলার) পাবেন।
১৯০১ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী শান্তিপ্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। মাঝে বিশ্বযুদ্ধের বছরগুলোতে পুরস্কার দেওয়া বন্ধ ছিল। ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট ১০১ বার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। আর এ পুরস্কার জিতে নিয়েছেন ১৩৫ বিজয়ী, যাদের মধ্যে রয়েছেন ১০৭ জন ব্যক্তি ও ২৮টি প্রতিষ্ঠান।
এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তিনবার শান্তিতে নোবেল পেয়েছে রেড ক্রস (১৯১৭, ১৯৪৪ ও ১৯৬৩ সালে)। এছাড়া জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর পেয়েছে দুবার (১৯৫৪ ও ১৯৮১ সালে)।
গত বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতেছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বা ডব্লিউএফপি। ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই, যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলগুলোতে পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং ক্ষুধাকে যুদ্ধ-সহিংসতার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার বন্ধের চালিকাশক্তি হিসেবে অবদান রাখায় সম্মানজনক এ পুরস্কার দেওয়া হয় জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থাটিতে।