বাংলাদেশে প্রচলিত বার্ষিক ফসলধারাগুলোর মধ্যে দ্বি-ফসলি আমন-বোরোকে তিন ফসলি করা ও আবাদকৃত জমির উর্বরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গবেষণা করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক। এ বিষয়ে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণা কার্যক্রমের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকিরের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. কাজী ফরহাদ কাদির এবং সহযোগী গবেষক ড. মো. নেছার উদ্দীন।
সংবাদ সম্মেলনে গবেষকরা বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত বার্ষিক ফসলধারাগুলোর মধ্যে দ্বি-ফসলি আমন-বোরো অন্যতম। দেশের মোট আবাদযোগ্য জমির শতকরা প্রায় ২২ ভাগ এই ফসলধারার অধীনে। আমন ও বোরোর মধ্যবর্তী সময় কম। যার ব্যপ্তি ৬০ দিনেরও কম। আমন ও বোরোর মধ্যবর্তী স্বল্প সময়ে প্রচলিত অন্য কোনো ফসল চাষের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই এ সময় কৃষকরা জমি পতিত রাখেন। কিন্তু স্বল্পকালীন আগাম রোপা আমন (যেমন বিনাধান-৭) এবং নাবী বোরো ধান (যেমন বিনাধান-১৪) চাষ করে আমন-বোরোর মাঝের পতিত সময়কাল বাড়িয়ে ৭০-১০০ দিন করা সম্ভব। এই সময়ে সবজি হিসেবে খাওয়া যায় এমন শিম জাতীয় ফসল যেমন মটরশুটি, লিগনোসাস শিম, ঝাড় শিম, ফেলন, সয়াবিন এবং মুগ আবাদ করে সফলতা পেয়েছি। এতে করে দ্বি-ফসলি জমি থেকে তিন ফসল পাওয়া যায়। শিম জাতীয় গাছগুলো থেকে বীজ সংগ্রহ করে গাছগুলোর অবশিষ্ট অংশ জমিতে সবুজ সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে জমির জৈব উপাদান ও পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়। ফলে জমিতে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন কম হবে। পাশাপাশি দুই ফসলের জায়গায় তিন ফসল পেয়ে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।
গবেষণা থেকে তারা আরো জানান, অনুজীব সারের প্রয়োগসহ মটরশুটি ও ঝাড় শিমের চাষ কৃষকের জন্য বেশি লাভজনক হবে। এই উৎপাদন ব্যবস্থায় শিম পরবর্তী বোরো ধানের উৎপাদন শতকরা ১৫-২০ ভাগ পর্যন্ত বেশি পাওয়া গেছে। এই গবেষণা অল্পপরিসরে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে তবে বৃহত্তর পরিসরে প্রস্তাবিত ফসলধারাটির পরীক্ষণ প্রয়োজন বলে মনে করেন গবেষকদল।