বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের দেশেও গ্যাস সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতেও উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে এটি সাময়িক সমস্যা, আগামী জানুয়ারি মাস থেকে এই সংকট কেটে যাবে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ-২০২২ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সিরামিক শিল্প বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় একটি খাত। দেশে উৎপাদিত হওয়া সিরামিক পণ্য চাহিদার ৮৫ ভাগ পূরণ করছে। ইতোমধ্যে ৫০টি দেশের ওয়ান বিলিয়ন ডলার পরিমাণ সিরামিক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। সিরামিক পণ্যের উৎপাদন ও রপ্তানি যাতে আরও বাড়ানো যায় সে অনুসারে ব্যবসায়ীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে সরকার।
তিনি বলেন, তৈরি পোশাকের মতো সিরামিকসহ যেসব খাতের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে চায় তাদের সবার সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ও মহাসচিব ইরফান উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
বিসিএমইএ আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এশিয়ার অন্যতম এ সিরামিক মেলায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২০টি দেশের ১২০টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১৫০টি ব্র্যান্ড নিয়ে অংশ নিয়েছে।
এতে দর্শনার্থী ও ক্রেতা বিক্রেতাসহ সবার জন্য প্রবেশ ফি ছাড়া উন্মুক্ত থাকবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, দেশের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে সিরামিক খাত ক্রমেই অবস্থান সুসংহত করে চলেছে। ৫০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের সিরামিক পণ্য। অমিত সম্ভাবনাময় এই খাতকে আরও এগিয়ে নিতে তৎপর রয়েছেন দেশের সিরামিক শিল্প উদ্যোক্তারা। এরই ধারাবাহিকতায় তৃতীয়বারের মতো রাজধানী ঢাকায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী সিরামিক এক্সপো-২০২২।
অনুষ্ঠানে বিসিএমইএ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, দেশে ইতোমধ্যে সিরামিক, টেবিলওয়্যার, টাইলস ও স্যানিটারি ওয়্যারের ৭০টিরও বেশি শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় বাজারে বিক্রয়ের পরিমাণ বার্ষিক প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। গত দশ বছরে সিরামিক খাতে উৎপাদন বেড়েছে ২০০ শতাংশ এবং বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে সিরামিক পণ্য রপ্তানি করে বছরে আয় প্রায় পাঁচশ কোটি টাকা। এ খাতে রপ্তানি আয় বাড়ছে, বিনিয়োগও বাড়ছে।
তিনি বলেন, এ শিল্পে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ এ খাতটির সঙ্গে জড়িত।
ইরফান উদ্দিন বলেন, উন্নত গুণগতমান ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের কারণে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশে তৈরি সিরামিক পণ্যের কদর বাড়ছে। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে নতুন নতুন বাজারও সৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ ২০২২ দেশের তৃতীয় ও সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। প্রস্তুতকারক, রপ্তানিকারক এবং সরবরাহকারীরা তাদের নতুন পণ্য, আধুনিক প্রযুক্তি এবং নিজেদের দক্ষতা বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন এ এক্সপোতে। এক্সপোর মাধ্যমে দেশীয় সিরামিক পণ্য বাজারজাতকরণের পাশাপাশি ব্যবহারে সচেতনতা বাড়ানো হবে। সেই সঙ্গে থাকবে স্পট অর্ডারের সুযোগ।
মেলার প্রিন্সিপাল স্পন্সর হিসেবে রয়েছে আকিজ সিরামিকস প্লাটিনাম স্পন্সরস শেলটেক সিরামিকস ও ডিবিএল সিরামিকস এবং কো-স্পন্সর হিসেবে থাকছে মীর সিরামিক, আবুল খায়ের সিরামিক বিএইচএল সিরামিক, এইচএলটি ডিএনটি টেকনোলোজি ও সাকমি।
ওয়েম কমিউনিকেশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এক্সপোতে ৩ দিনে থাকছে পাঁচটি সেমিনার, জব ফেয়ার, বিটুবি এবং বিটুসি মিটিং, রাফেল ড্র, আকর্ষণীয় গিফট, লাইভ ডেমোনস্ট্রেশন, স্পট অর্ডার এবং নতুন পণ্যের মোড়ক উন্মোচনের সুযোগ।