প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান বিনিয়োগকারীদের আশার বাণী শোনার পর রোববার লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে বড় উত্থান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক প্রায় ১০০ পয়েন্ট বেড়ে গেছে। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে লেনদেনে অংশ নেওয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। আর লেনদেনে হয়েছে ১০০ কোটি টাকার ওপর।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। সেই সঙ্গে বড় উত্থান হয়েছে মূল্য সূচকের।
এর আগে আট কার্যদিবসের টানা দরপতনে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ৫৫৫ পয়েন্ট কমে গেলে গত ২২ মে মার্জিন ঋণের হার বাড়িয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।
আগে বিনিয়োগকারীরা তাদের নিজস্ব তহবিলের ৮০ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ মার্জিন ঋণ নিতে পারতেন। বিএসইসির নতুন নির্দেশনার ফলে বিনিয়োগকারীরা তাদের নিজস্ব তহবিলের সমপরিমাণ মার্জিন ঋণ নিতে পারবেন।
বিএসইসি থেকে মার্জিন ঋণের হার বাড়ানোর পাশাপাশি একইদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, সিনিয়র অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাসকে নিয়ে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠকে শেয়ারবাজার ভালো করতে দিকনির্দেশনা দেন অর্থমন্ত্রী।
এতে ২৩ মে শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়। তবে পরের দুই কার্যদিবস আবার দরপতন দেখা যায় শেয়ারবাজারে। এ পরিস্থিতিতে ২৬ মে শেয়ারবাজার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান। শেয়ারবাজারে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গত বৃহস্পতিবার লেনদেনের শেষদিকে সূচকের বড় উত্থান হয়।
আর ওইদিন রাতে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) আয়োজিত সংলাপে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপের বিষয়টি জানিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের শেয়ারবাজারে বড় কোনো সমস্যা নেই। বর্তমানে বহির্বিশ্বের কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে। এটা সমায়িক। আপনারা (বিনিয়োগকারীরা) ভয় পাবেন না।
তিনি আরও বলেন, সবাই আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। শেয়ারবাজার নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু। আশাকরি আগামী সপ্তাহে শেয়ারবাজার ভালো কিছু হবে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানের এমন আশার বাণী শোনানোর পর রোববার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে শেয়ারবাজার খুলতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সময়ের সঙ্গে বাড়তে দেখা যাচ্ছে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ৯১ পয়েন্ট বেড়ে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ২৮ পয়েন্ট। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ১৭ পয়েন্ট বেড়েছে।
এ সময় পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯টির। আর ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬২ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২১০ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ১২৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৫টির, কমেছে ১৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টির।