নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। বিশ্ব দরবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে জাতিকে অনেক নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। বিশ্ব নেতারা প্রশ্ন করে- যে নেতা দীর্ঘ কারাভোগসহ নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে সশস্র সংগ্রামের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে তাঁকে তোমরা হত্যা করেছ, তখন কোন উত্তর দিতে পারি না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে এই দেশ যে কলঙ্ক বহন করছে তা একমাত্র বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করে কিছুটা আত্মসন্তুষ্টি নেয়া যাবে। জাতির পিতার রক্তের ঋণ শোধ করা যাবে না। সবাই যে যার স্থান থেকে কর্ম ও ব্যক্তি জীবনে কর্মের মাধ্যমে শোষণ ও দারিদ্র্য মুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলি।
প্রতিমন্ত্রী বুধবার জাতীয় শ্রমিক লীগ কমলাপুর ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোতে (আইসিডি) ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কমলাপুর আইসিডিতে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী পেশাজীবি শ্রমজীবী মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধুর আন্তরিকতা ও ভালোবাসার কথা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন-বিশ্ব আজ দুভাগে বিভক্ত, শোষক আর শোষিত; আমি শোষিতের পক্ষে।’ জাতির পিতা বাংলার খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষকে বিশ্বাস করতেন ও তাদের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্ম ও শ্রম উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন। তিনি যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি অচল রাষ্ট্রকে সচল করার জন্য সারাদেশের কলকারখানা মিলসমূহ খুলে দেন এবং এর পরিচালনার দায়িত্ব শ্রমিকদের প্রদান করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে বঙ্গবন্ধু শ্রমিকদের কল্যাণের লক্ষ্যে কাজ করেছেন।
তিনি বাংলাদেশ সৃষ্টির পূর্বেই মেহনতি জনতা ও শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায়, ১৯৫৪ সনে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের ইশতেহারে এবং ৬ দফা দাবিতে শ্রমজীবী মানুষের কথা বলেন। পেশাজীবী ও শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে সাম্রাজ্যবাদী মানুষের হাতে তিনি সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। ভারত পাকিস্তান এর নেতারা যা পারেনি বাংলাদেশের নেতা বঙ্গবন্ধু সশস্র সংগ্রামের মাধ্যমে নেতৃত্ব দিয়ে একটি নতুন দেশ সৃষ্টি করে তা পেরেছেন। সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী দেশে সর্বহারা সৃষ্টি করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে একটি নতুন ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে অকেজো তলাবিহীন রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছে; কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে মাত্র সাড়ে তিন বছরে ৯% জিডিপি অর্জন করেছেন।
জাতির পিতার রক্ত দেশরত্ন শেখ হাসিনা না থাকলে হয়তো ১৫ আগস্টের কুশীলবদের আশা সার্থক হতো। বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নত রাষ্ট্র হতে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন। আসুন আমরা সকল পেশার মানুষ মিলে নিজেদের কাজে আত্মনিয়োগ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলি।
শোক সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক, জাতীয় শ্রমিক লীগ রেলওয়ের সিনিয়র সহ সভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ, শেখ মো. আসলাম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঢাকা কাস্টমস এসোসিয়েশন মো. মাসুদ পারভেজসহ অনেকে।