আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন যদি দেশে না আসতেন, তা হলে বাংলাদেশ থাকতো না। বাংলাদেশটাই পাকিস্তানে পরিণত হয়ে যেত। বঙ্গবন্ধুকন্যা ১৭ মে বাংলার মাটিতে পা রাখার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ পুনর্জন্ম হয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুজ্জীবিত হয়েছিল।
আজ বুধবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৪ দশকের মানবতার আলোকবর্তিকা দেশরত্ন শেখ হাসিনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বুকে নয়, স্বাধীনতা বিরোধীরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বুকে গুলি করেছিল উল্লেখ্য করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান আরও বলেন, ৭৫’এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার মধ্যদিয়ে বাঙালীদের দীর্ঘদিনের লড়াই সংগ্রামের সুফল ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি বাংলাদেশে ফিরে না আসতেন- তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্ণ প্রাপ্তি তো দূরে থাক, এই দেশটাই সেদিন থাকতো না। এটাই ছিলো সেদিনের বাস্তবচিত্র। সেদিন বঙ্গবন্ধু এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশ স্বাধীন জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কিন্তু ৭৫’এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার মধ্যদিয়ে বাঙালির দীর্ঘদিনের লড়াই সংগ্রামের ফসল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেও হত্যা করা হয়েছিল। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল। সেদিন বাংলাদেশকে নতুন করে পাকিস্তান তৈরি করার চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে ফিরে এসেছিল বলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়েছে। মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। নানামুখী উন্নয়নের জোয়ারে আজ পুরো বাঙালি জাতি ভাসছে।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বাবা-মা ভাইসহ পরিবারের সকল সদস্যদের হারিয়ে দুঃখের সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের কাছে এসেছিলেন উল্লেখ্য করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে সারাদেশের পথে-প্রন্তরে, মাঠে-ঘাটে, শহরে-নগরে একটি আওয়াজ উঠেছিল- চলো চলো শেখ হাসিনাকে দেখার মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধুকে আমরা আবার দেখবো। সেদিন বাংলার মানুষ, বাংলার আকাশ, বাংলার পাখি ও বাংলার বাতাস কেঁদেছিল।’
তিনি আরও বলেন, দেশের মাটিতে পা দিয়ে সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেছিলেন- আমার রাজনীতি করার কোনো ইচ্ছে ছিল না, আমার রাজনীতিতে আশার কথা নয়। কিন্ত আজ পিতাকে হারিয়েছি, মাকে হারিয়েছি, পরিবারের সকল সদস্যকে হারিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন দেখেছিলেন- সেই স্বপ্ন পূরণ করাই আজ আমার মূল লক্ষ্য। বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে যদি আমার জীবন বাবার মতো বিলিয়ে দিতে হয় দিবো। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো।
আবদুর রহমান আরও বলেন, ‘স্বদেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুকন্যা যে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন, তার প্রতিটি কথাই আজ বাস্তবায়ন হয়েছে, প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি আজ শুধু শেখ হাসিনা নয়, সফল রাষ্ট্রনায়ক নয়, তিনি বাঙালির জাতির নেতা নয়, তিনি আজ বিশ্বনেত্রী। বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে মানবতার মা হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন।’
করোনাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, করোনায় পুরো বিশ্ব আজ থমকে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর পয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর পরিশ্রম ও দুর্র্দর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু রাষ্ট্রপরিচালনায় সফল নয়, দলের নেতৃত্বে তিনি সফল। তার নির্দেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগ সহ সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। মানুষের বাড়ি বাড়ি খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। এটাই বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের গুণ।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী সভাপতিত্বে ও ত্রাণ সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড় পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন,পারভীন জামান কল্পনা, সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসিরউদ্দিন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. খলিলুর রহমান প্রমুখ। উপ-কমিটির সদস্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন আখলাকুর রহমান মাইনু, ডা. হেদায়াতুল ইসলাম বাদল, ড. মোয়াজ্জেম হোসেন মাতাব্বুর আমিনুল, মো. খলিলুর রহমান, হাসিবুর রহমান বিজন, মো. হারুন অর রশীদ, শাহ আলমগীর, নারায়ন দেবনাথ, মো. জসিমউদ্দিন চৌধুরী, কৃষিবিদ দীপক কুমার বনিক, ডা. শেখ ফয়েজ আহমেদ, নুরুননবী ভুইয়া কামাল, মো. মাহবুব রশীদ, মো. মিজানুর রহমান, আব্দুল বারেক, আমিনুল ইসলাম খান আবু, আরিফ উল্লাহ সরকার, ডা. পবিত্র দেবনাথ, আকাশ জয়ন্ত গোপ, শাহ আলমগীর, অরিন্দম হালদার, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, পল্লব কুমার সিংহ, রফিকুল ইসলাম রনি, ফারজানা শোভা, নুরুল হক সজীব, মো. ফারুকুজ্জামান, ইদ্রিছ আহমেদ মল্লিক, খালিদ হোসাইন খান বিপু, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আলীম, ইঞ্জিনিয়ার আবুল কাশেম সীমান্ত, মোহাম্মদ আলী খান রিপন, সাইফুল ইসলাম সাইফ, দেবাশীষ আইচ ও আমরা ঢাকা বাসীর সভাপতি শুকুর সালেক প্রমুখ।