নিউজ ডেস্ক,
গত সোমবার এক কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, দাবি মেনে পদত্যাগ না করলে আওয়ামী লীগ পালাবার পথ খুঁজে পাবে না। ফখরুলের এমন বক্তব্যের জবাবে,
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না, পালায়নি। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে রাজাধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন।
সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের বিরোধী দল, যদিও পার্লামেন্টে নেই, বলে আমরা না কি পালানোর পথ পাব না। হুমকি দেয়।
তিনি বলেন, যিনি এ বক্তব্য দেন তাকে একটু স্মরণ করাতে চাই শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ কোনোদিন পালায় না, পালায়নি।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পেরেছে? পারে নাই। তারপর এরশাদ ও খালেদা জিয়া। এরা তো রীতিমতো একাত্তর সালের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো গণহত্যা চালিয়েছে। ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে।’
বিএনপির ধারাবাহিক কর্মসূচির অর্থের যোগান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, কোথা থেকে এত টাকা পাচ্ছে? যত চুরি করা টাকা ছিল, সেগুলো এখন বেরোচ্ছে? এক একটি মিটিং করতে যে টাকা খরচ করছে, সেগুলো কোথা থেকে আসছে?’ ২০০৭ সালে রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে তারেক রহমান বিদেশে পালিয়েছিল বলে আবারও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। সেই সময় তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বিদেশে ছিলেন বলেও জানান
বিএনপির ধারাবাহিক কর্মসূচির অর্থের যোগান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, কোথা থেকে এত টাকা পাচ্ছে? যত চুরি করা টাকা ছিল, সেগুলো এখন বেরোচ্ছে? এক একটি মিটিং করতে যে টাকা খরচ করছে, সেগুলো কোথা থেকে আসছে?’ ২০০৭ সালে রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে তারেক রহমান বিদেশে পালিয়েছিল বলে আবারও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। সেই সময় তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বিদেশে ছিলেন বলেও জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাকে তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসতে দেবে না। সব আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাকে বলে দিয়েছে, আমাকে নিয়ে ঢাকায় যেন অবতরণ না করে, ঢাকায় তাদের অবতরণ করতে দেবে না। এই ধরনের নির্দেশ দেওয়ার পরেও আমি এক রকম জোর করে বাংলাদেশে ফিরে আসি।’
২০০৭ সালে বিদেশ থেকে শেখ হাসিনার দেশের ফেরার সময় বিমানবন্দরে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা যাত না যায়, তার জন্য তৎকালীন সরকার হুমকিও দিয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি। ওই সরকারের হুমকি উপেক্ষা করে দলীয় নেতাকর্মীদের বিমানবন্দরে যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আমাকে অনেক ভয় দেখানো হয়েছিল, বলা হয়েছিল যে মুহূর্তে নামবো (বিমানবন্দরে), সেই মুহূর্তে গুলি করে মারবে। আমি বলেছি— খুব ভালো কথা, দেশের মাটিতো মরলাম, বিদেশেতো মরতে হলো না। আমাকে বলা হয়েছিল, এমন জায়গায় নেওয়া হবে কেউ খোঁজ পাবে না, আমি বলেছিলাম— বাংলাদেশে সেরকম জায়গার সৃষ্টি হয় নাই।’ সেই সময়ের নানান ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমিতো জোর করে দেশে ফেরত এসেছি। কিন্তু যাদের নেতা পালিয়ে গেছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি, গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছে, মানি লন্ডারিং মামলা, যার বিরুদ্ধে আমেরিকার এফবিআই এসে সাক্ষী দিয়ে গিয়েছিল, যেটাতে তারেক জিয়া সাজাপ্রাপ্ত, যার ভিসা আমেরিকা বাতিল করে দিয়েছিল। সেই সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি যে দলের নেতা, তাদের মুখে বড় বড় কথা। আমরা নাকি পালানোর পথ পাবো না। তোরাতো পালিয়েই আছিস।এক পলাতক আসামির তত্ত্বাবধানে এত লম্বা কথাটা আসে কোথা থেকে?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, সহনশীলতা দেখাচ্ছি। কিন্তু আবার দেখলাম তারা সেই অগ্নিসন্ত্রাস করছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পরে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর যে অত্যাচার করেছিল, তার একভাগ প্রতিশোধ যদি নিতাম, তাহলে তোদের হদিসই পাওয়া যেত না। আমরা তো প্রতিশোধে বিশ্বাস করিনি। ঠিক আছে যার যার দল কর। আমরা তো আওয়ামী লীগ অফিসে ঢুকতেই পারতাম না।’ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং ২০০৭ সালের বাতিল হওয়া নির্বাচনের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘‘যাদের আমলে দুই-দুইবার ভোট বাতিল হয়েছে, তাদের মুখে এত লম্বা কথা আসে কোথায় থেকে? অবশ্যই একটা প্রবাদ আছে, ‘চোরের মায়ের বড় গলা।’ ওরা হলো সেই চোর।’’ জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর সরাসরি জড়িত বলে প্রমাণিত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সারা দেশে ব্যাপকভাবে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশেষ করে ঢাকা শহরে বেশি। দেখা যায় ডেঙ্গুর প্রজনন ক্ষেত্র সব চেয়ে বেশি আমাদের ধনিক শ্রেণীর ফ্ল্যাট-বাড়ির নিচে।’ সবাইকে ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।
কৃষকলীগের সভাপতি সমীর চন্দের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতির সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন, মতিয়া চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।