আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না। দেশের সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টে আছেন। তা দেখে শেখ হাসিনার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তিনি সাধারণ মানুষদের জন্য কাজ করেন, চিন্তা করেন। এই জন্য প্রতিদিন রাতে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা ঘুমান। আমরা ভাগ্যবান, শেখ হাসিনার মতো নেতাকে পেয়েছি।
দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে আজ সোমবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা সবাই দলকে এক করে রাখুন। ঐক্যবদ্ধ রাখুন। ত্যাগী নেতাদের গুরুত্ব দিন। বসন্তের কোকিলদের গুরুত্ব দেবেন না। বিপদের সময় বসন্তের কোকিলদের লাইট জ্বালিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। ত্যাগীদের সে সময় খুঁজে পাবেন। নিজেদের লোক বানাবেন না। নিজেদের লোক ঠিক থাকে না। চেয়ার পড়ে গেলে কেউ সালাম দেবে না। চোখের পলকে জেল হত্যাকাণ্ড, চোখের পলকে একুশে আগস্ট ঘটল এই ভাঙা-গড়ার দেশে। এই জোয়ার-ভাটার দেশে কখন কী হয়, তা আমরা জানি না। একমাত্র আল্লাহই জানেন।
আওয়ামী লীগের এই সাধারণ সম্পাদক বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা উদার বলেই আজকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়েও বেগম খালেদা জিয়া বাড়িতে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে বাড়িতে থাকতে অনুমতি দিয়েছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনার বাড়ি তো ঠাকুরগাঁওয়ে। সমাবেশ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল ও সমাবেশ দেখে যান। আপনারা কথায় কথায় বলেন, আপনাদের সমাবেশে ঢল নেমেছে। কথায় কথায় তরঙ্গ নেমেছে। কিন্তু ঢল কাকে বলে, নদী আর সাগরের তরঙ্গ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুরে আপনি দেখে যান। আপনারা সমাবেশের তিন দিন আগে থেকে হাঁড়ি, পাতিল, বিছানা, বালিশ নিয়ে নাটক শুরু করেন। সেই নাটকের অংশ থাকে মশার কয়েল। হায়রে নাটক।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আগামী ডিসেম্বরে খেলা হবে। এবার খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, হাজার হাজার কোটি টাকা যারা বিদেশে পাচার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মতো নির্বাচন আর হবে না। সুষ্ঠু ভোট হবে। শেখ হাসিনা নির্বাচনে সময় রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। সে সময় একটা নিরপেক্ষ ভোট হবে। নির্বাচন সামনে রেখে মারামারি করবেন না। উসকানি দেবেন না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কিন্তু মাঠ ছেড়ে দেয়নি। আপনারা আমাদের ওপর হামলা করবেন, আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাব, এটা কি হয়? সোহরাওয়াদী উদ্যানের নাম শুনলে আপনাদের গা জ্বলে কেন। কারণ এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।
সম্মেলনে অন্যতম অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক এমপি হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, সদস্য ও সাবেক এমপি সফুরা বেগম রুমি, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ইকবালুর রহিম, সাবেক মন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী, এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল, এমপি শিবলী সাদিক ও এমপি জাকিয়া তাবাসসুম জুই।