ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর রাজধানীর মাদানি এভিনিউর ফুডকোর্ট শেফস টেবিলের ৩৬টি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে ভ্যাট ফাঁকির মহোৎসব দেখতে পায়। অধিদপ্তরের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ২২ মার্চ শেফস টেবিলে অভিযানটি পরিচালনা করেন।
সংস্থার সহকারী পরিচালক মুনাওয়ার মুরসালীন অভিযানে নেতৃত্ব দেন। শেফস টেবিল ইউনাইটেড গ্রুপের আয়োজনে একটি ফুডকোর্ট।এটি ইউনাইটেড সিটি, মাদানি এভিনিউ, সাতারকুল, বাড্ডায় অবস্থিত।রাজধানীর ভোজন-রসিকদের একটি প্রিয় খাবারের সমাহার।এই ফুডকোর্টে বিভিন্ন ব্রান্ডের ৩৬টি খাবারের দোকান রয়েছে।এটি উদ্বোধন করা হয় ২০১৯ এর ডিসেম্বর মাসে।
অভিযানের সূত্রে অনুসন্ধানে দেখা যায়, শুরু থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত ১১ মাসে মোট ১৭.৫৯ কোটি টাকার বিক্রি তথ্য গোপন করা হয়েছে।করোনার কারণে ফুডকোর্টটি এপ্রিল ২০২০ থেকে জুন ২০২০ তিন মাস বন্ধ ছিল। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঐ ১১ মাসে ৩৬টি রেস্টুরেন্টে প্রকৃত বিক্রয় ছিল ২৩.৪৯ কোটি টাকা এবং ভ্যাটযোগ্য মূল্য ছিল ২০.৪২ কোটি টাকা।
এই ৩৬ টি রেস্টুরেন্ট পৃথকভাবে ভ্যাট রিটার্নে প্রদর্শন করেছে ২.৮৩ কোটি টাকার বিক্রয়।তাদের অপ্রদর্শিত সেলসের পরিমাণ ১৭.৫৯ কোটি টাকা।
এসব রেস্টুরেন্টের এই গোপনকৃত বিক্রয়ের উপর ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ২.৬১ কোটি টাকা।এখানে উল্লেখ্য রেস্টুরেন্টগুলো খাবার বিক্রির সময়ে ক্রেতাদের নিকট থেকে ভ্যাট আদায় করেছিল।কিন্তু জনগণের নিকট থেকে আদায়কৃত ভ্যাট সরকারী কোষাগারে জমা দেয়নি।
অভিযানে গোয়েন্দা দল ইউনাইটেড গ্রুপের শেফস টেবিলের কম্পিউটারের তথ্য ও অন্যান্য বাণিজ্যিক দলিলাদি জব্দ করে আনে।শেফস টেবিল প্রতিটি রেস্টুরেন্ট থেকে ১৮% রেভিনিউ শেয়ারিং করে।এই তথ্যাদি ও রেস্টুরেন্টের রিটার্ন যাচাই করে এই হিসাব বের করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানভিত্তিক তালিকা এই সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এই তালিকা অনুযায়ী দেখা যায় সবচেয়ে ফাঁকি দিয়েছে আফগান গ্রিল – ২৩.৭১ লক্ষ টাকা, দরবার ক্যাটারিং – ১৫.৭৪ লক্ষ টাকা, টরকা এক্সপ্রেস – ২৪.৬০ লক্ষ, পান্জাব কিচেন – ১৪.০৪ লক্ষ টাকা, থাই এমারেল্ড – ১৩.৩৯ লক্ষ টাকা, এবসলিউট থাই – ১২.৫৩ লক্ষ টাকা, সিলান্ট্রো – ১২.৫৯ লক্ষ টাকা, পিৎজা গাই – ১২.১৯ লক্ষ টাকা, আলফ্রেসকো -১১ লক্ষ টাকা।
ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে প্রত্যেকটি রেস্টুরেন্টকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।তাদের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়েরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
একইসাথে, ভবিষ্যতে ভ্যাট ফাঁকি রোধে শেফস টেবিলের প্রতিটি রেস্টুরেন্টে ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস প্রবর্তনের জন্য ভ্যাট গোয়েন্দা ঢাকা উত্তর কমিশনারেটকে অনুরোধ করেছে।