চলতি সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। একইসঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
সূচক ও লেনদেন কমার পাশাপাশি দুই বাজারেই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। তবে এই পতনের বাজারেও চার কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে।
এর আগে নতুন বছরের প্রথম পাঁচ কার্যদিবস শেয়ারবাজার টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকে। এতে বছরের প্রথম সপ্তাহেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ২৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। আর বাজার মূলধন বাড়ে ১৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা।
তবে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার কিছুটা দরপতন হয়। ডিএসইর প্রধান সূচক ৫৪ পয়েন্ট পড়ে যায়। অবশ্য দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার আবার বড় উত্থান হয়। ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বাড়ে ৬১ পয়েন্ট। তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবারও বড় উত্থান হয়। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বাড়ে ৫৪ পয়েন্ট।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার (১২ জানুয়ারি) ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেয় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা, যা প্রথম দুই ঘণ্টা অব্যাহত থাকে।
তবে লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় এসে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমতে থাকে। ফলে দেখতে দেখতে সূচকের বড় পতন হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৯৯৬ পয়েন্টে নেমে গেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৯ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৬০৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় এক পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৬৬৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ৯৭৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৩১২ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৩টির। আর ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও চারটি কোম্পানির শেয়ার দিনের দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে।
এই ৪ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম, তাল্লু স্পিনিং মিলস, আরএকে সিরামিক এবং রংপুর ফাউন্ড্রি। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দিনের সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হলেও এক পর্যায়ে বিক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। অর্থাৎ যাদের কাছে কোম্পানিগুলোর শেয়ার আছে তারা বিক্রি করতে চাচ্ছিলেন না।
এদিকে সূচকের বড় পতনের বাজারে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের শেয়ার। কোম্পানিটির ১০১ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ৯৮ কোটি ১৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৯৬ কোটি ৪৪ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- পাওয়ার গ্রিড, আরএকে সিরামিকস, তিতাস গ্যাস, রবি, ফারইস্ট ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস এবং বসুন্ধরা পেপার।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৬৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৪টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।