শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের শাল গজারী বন ধ্বংস করে বনের ভিতরেই গর্ত করে পুড়িয়ে কাঠকে কয়লা বানিয়ে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। এক শ্রেণির অসাধু কাঠচোর নতুন কৌশলে বন ধ্বংসে এ ধরনের কর্মকান্ড চালালেও বন বিভাগ নির্বিকার। প্রকাশ্য দিবালোকে বছরের প্রতি দিনই বনের ভিতরে এ ভাবে শাল গজারী বন ধ্বংস হলেও বন বিভাগ বিষয়টি জানে না বলে জানিয়েছে। অথচ বনরক্ষী ও বনকর্মীদের বিরুদ্ধে এসব কাঠচোরদের কাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত ‘নগদ নারায়ন’ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঝিনাইগাতী গারো পাহাড়ের সরেজমিনে পরিদর্শনকালে অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রের আশপাশে গান্ধিগাঁও, হালচাটি, গজনী, বাকাকুড়া, তাওয়াকুচা, মালাকুচা এলাকায় বনের ভিতরে মাটিতে গর্ত করে শাল গজারী গাছ টুকরা করে গর্তের ভিতরে আগুনে পুড়িয়ে কয়লা করতে দেখা যায়। এ সময় সাংবাদিকদের দেখে কাঠচোররা সবকিছু ফেলে গহীন বনে দৌড়ে পালায়। পরবর্তীতে পশ্চিম বাকাকুড়া গ্রামের ও মধ্যডেফলাই গ্রামের কাঠচোরের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১ বস্তা কয়লা বানাতে ৩/৪টি শাল গজারী গাছের প্রয়োজন এর কমে হয় না। আর ১ বস্তা কয়লা বর্তমান বাজারে ৬০০/৭০০ টাকা বিক্রি করা যায়। জীবিকার তাগিদে কাঠকে কয়লা বানিয়ে বিক্রির কথা বলতে গিয়ে তারা আরও জানায়, কাঠ নিয়ে বিক্রি করতে গেলে সব শ্রেণির প্রশাসন অত্যাচার করে। টাকা পয়সা সবকিছু কেড়ে নেয়। এ জন্য কাঠ পুড়িয়ে কয়লা করে বিক্রি করছি। প্রতিদিন অনেক বস্তা কয়লা বিক্রি করা যায়। আরও জানায়, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা বিক্রির জন্য বন বিভাগের লোকজনকে প্রতি সপ্তাহে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়। হিসাব করে দেখা গেছে, ৬০০/৭০০ টাকার কয়লা তৈরীতে প্রায় ৮/১০ হাজার টাকার কাঠ পুড়তে হয়। এভাবেই নতুন কৌশলের মাধ্যমে কাঠচোররা বন ধ্বংস করে যাচ্ছে দিনের পর দিন। এ ব্যাপারে বন বিভাগের অফিসে যোগাযোগ করা হলে লোকজন জানায় যে, এ ধরনের ঘটনার বিষয়ে তারা অবগত নন। তবে বিষয়টি তারা অনুসন্ধান করবেন বলে জানান। তবে অদ্যবধি বন বিভাগের লোকজন কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।